রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া একদিনের অবিরাম ভারী বর্ষণে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হঠাৎ শুরু হওয়া ঝড় ও বৃষ্টিতে উপজেলার নিম্নাঞ্চল, চরাঞ্চল এবং পদ্মার তীরবর্তী এলাকার ফসলি জমি পানিতে ডুবে গেছে। এতে বোরো ধানের পাশাপাশি সরিষা, টমেটো এবং অন্যান্য শীতকালীন ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, রবি মৌসুমে বোরো ধান ভালো ফলন আশা করা হয়, কিন্তু হঠাৎ এই দুর্যোগ তাদের সমস্ত শ্রম, সেচ এবং বিনিয়োগ নষ্ট করে দিয়েছে। অনেক কৃষক জানান, তারা ব্যাংক ঋণ, এনজিও ঋণ এবং ধার করা টাকায় আবাদ করেছিলেন, ফলে হঠাৎ এই ক্ষতি তাদেরকে বড় আর্থিক অনিশ্চয়তার মুখে ফেলেছে।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, “ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক জরিপের তথ্য অনুযায়ী বোরো ধানের উল্লেখযোগ্য অংশ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ধারণের জন্য মাঠ পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ চলছে। জরিপ শেষে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন উপজেলা ও জেলা কৃষি বিভাগে পাঠানো হবে।”
কৃষকরা দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের আর্থিক সহায়তা, সহজ শর্তে পুনরুদ্ধার ঋণ এবং তৎক্ষণাৎ জরুরি কৃষি সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলার সাধারণ কৃষকরা উল্লেখ করেন, গোদাগাড়ীর কৃষি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে হঠাৎ এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ তাদের টিকে থাকার লড়াইকে কঠিন করে তোলে। “এই ধাক্কা থেকে ফিরে আসতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার সাহায্য ছাড়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়,” জানান স্থানীয় কৃষক আলী হোসেন।
উপজেলার কৃষি অফিসার মরিয়ম আহমেদ বলেন, ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের পরই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক সহায়তার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। তবে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে স্থানীয় কৃষকদের জন্য ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়তে পারে।

