কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিসে চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে শনিবার(২৫ অক্টোবর) দুপুরে ছাত্র জনতার ব্যানারে ওই অফিস ঘেরাও করা হয়। পরে বিক্ষোভ শেষে ওই অফিসের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন।
গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সাত ক্যাটাগরিতে ওই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে এর আগের রাতে এবং শুক্রবার সকালে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ হোসেন ইমামের নিজস্ব বাসা থেকে বেশ কিছু নারী-পুরুষকে ফাইল হাতে বের হতে দেখা যায়। এ সময় সাংবাদিকরা তাদের ছবি ও বক্তব্য সংগ্রহের চেষ্টা করলে তারা পালিয়ে যান। এ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি টক অফ দা টাউনে পরিণত হয়।
এরপরেই পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা দাবি তোলেন আরএমও ডাঃ হোসেন ইমাম নিয়োগ পরীক্ষার আগের রাতে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে তার বাসায় চাকরিপ্রার্থীদের হাতে তুলে দেন। তাদের অভিযোগ আরএমওর নেতৃত্বে একটি চক্র এভাবে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে বিক্ষুব্ধ জনতা। তারা এই নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল ও ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন।
তবে এইসব অভিযোগ অস্বীকার করে আরএমও হোসেন ইমাম বলেন,নিয়োগ পরীক্ষা সংক্রান্ত কোন বিষয়ে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। আমার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া বাড়িতে আমি বসবাস করি। তাছাড়া বাড়িতে ম্যাস ভাড়া দেওয়া আছে। সেটা দেখাশুনার দায়িত্বে আমার ভাবি ও স্ত্রী রয়েছেন। কে,কখন বের হয়েছে সেটাও আমি জানি না। সুতরাং আমি সাংবাদিকদের বলবো সংবাদ প্রকাশের আগে আপনারা আরও ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডাও শেখ মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন,নিয়োগ বাণিজ্য সংক্রান্ত কোন বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে একজন চিকিৎসকের বাড়ি থেকে পরীক্ষার্থীরা বের হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন ভিডি ক্লিপ ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানতে পেরেছি। এর বেশি কিছু জানি না।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন জানান, এই নিয়োগ পরীক্ষার সঙ্গে ডাঃ হোসেন ইমামের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে তার বাসা থেকে কিছু যুবক ফাইলপত্র হাতে বের হয়ে আসছে এমন একটি ভিডিও তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছেন। তবে ওই যুবকরা সিভিল সার্জন অফিসের চাকরিপ্রার্থী কি না সেটা নিশ্চিত করে এখনই বলা যাবে না। তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে আরএমওর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

