“অন্ধকারের ভেতর থেকেও আলো জ্বালিয়েছে তারা”
গুমের শিকার পরিবারগুলোর স্বজনদের সংগঠন “মায়ের ডাক” আজ গর্বে উদ্ভাসিত — কারণ আমাদের দুই সাহসী কন্যা, নাবিলা নূর (নূর হোসেন হিরুর কন্যা) এবং মারিয়া (মাসুম হোসেনের কন্যা), এবার এইচএসসি পরীক্ষায় উজ্জ্বল ফলাফল অর্জন করেছে।
তাদের এই সাফল্য শুধু শিক্ষাগত অর্জন নয়; এটি প্রতিকূলতার ভেতর দাঁড়িয়ে অদম্য মনোবল ও আশার দীপ্ত উদাহরণ।
প্রতিকূলতার মাঝেও পথচলা
নাবিলা ও মারিয়া এমন পরিবার থেকে উঠে এসেছে, যেখানে একদিন হঠাৎ প্রিয়জনদের হারিয়ে গেছে — জোরপূর্বক গুমের শিকার হয়েছেন তাদের পিতা। কিন্তু এই অমানবিক বাস্তবতাও তাদের স্বপ্নকে ভেঙে দিতে পারেনি।
প্রতিদিনের কষ্ট, অনিশ্চয়তা ও সামাজিক চাপ সত্ত্বেও তারা দৃঢ়ভাবে এগিয়ে গেছে। মায়ের চোখের জল মুছে দিয়ে বলেছে — “আমি পারব, আমি বাবার স্বপ্ন পূরণ করব।”
শিক্ষা ও সাহসের মেলবন্ধন
নাবিলা ও মারিয়া উভয়েই এইচএসসি পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়ে দেখিয়েছে, আশা কখনো মরে না।
তারা শুধু নিজেদের পরিবারের নয়, বরং সমগ্র গুমের শিকার পরিবারগুলোর সন্তানদের জন্য এক অনুপ্রেরণা।
“মায়ের ডাক” সংগঠনের প্রতিক্রিয়া
“মায়ের ডাক” সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়:
“আমাদের রাজকন্যাদের সাফল্য আমাদের সবার সাফল্য।
নাবিলা ও মারিয়া প্রমাণ করেছে, প্রতিকূলতার মধ্যেও শিক্ষা ও সাহসের আলো নিভে যেতে পারে না।
আমরা তাদের পাশে ছিলাম, আছি, থাকব — জীবনের প্রতিটি ধাপে।”
বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান ও “মায়ের ডাক”-এর মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা এক অভিনন্দন বার্তায় বলেন,
“এই অর্জন শুধু দুইটি মেয়ের নয় — এটি গোটা জাতির জেগে ওঠার বার্তা।
এই মেয়েরা দেখিয়ে দিয়েছে, ন্যায়বিচারের জন্য সংগ্রামরত পরিবারগুলো কেবল কান্নায় নয়, সাহসেও বেঁচে আছে।
আমরা গর্বিত নাবিলা ও মারিয়ার জন্য। তাদের এই সাফল্য ‘মায়ের ডাক’-এর হৃদয়ে আশার আলো জ্বালিয়েছে।”
ভবিষ্যতের প্রত্যাশা
“মায়ের ডাক” সংগঠন জানিয়েছে,
আগামীতে তারা এইচএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য মেন্টরশিপ, স্কলারশিপ ও মানসিক সহায়তা কার্যক্রম শুরু করবে।
সংগঠনের লক্ষ্য — “গুমের শিকার পরিবারগুলোর সন্তানরা যেন শিক্ষা ও মর্যাদায় নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে পারে।”
নাবিলা ও মারিয়া আজ প্রমাণ করেছে—
“যাদের জীবনের আকাশে অন্ধকার নেমে আসে, তারাই সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা হয়ে জ্বলে।”
তারা শুধু “মায়ের ডাক”-এর নয়, পুরো বাংলাদেশের গর্ব।
আমরা বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে এই দুই রাজকন্যা সমাজে ন্যায়বিচার ও মানবতার আলোকবর্তিকা হয়ে উঠবে।