কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের পুটিমারী এলাকায় বাঁধের পাশে বসবাস করেন দিনমজুর রফিকুল ইসলাম। স্ত্রী স্বপ্না বেগম অসুস্থ, সাত সন্তানের মধ্যে দুইজন মারা গেছেন। বাকি সন্তানদের মুখে নিয়মিত খাবার তুলে দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এই পরিবারকে।
রফিকুল দিনমজুরের কাজ করে কোনো রকমে সংসার চালান। কখনো খেতে কচু তুলে এনে রান্না করতে হয়, কখনো না খেয়েই সন্তানদের মুখে ভাত তুলে দেন। অভাব-অনটনের কারণে ১৩ বছরের ছেলে আবু সায়েম পড়াশোনার পরিবর্তে ঢাকায় গিয়ে কাজ করতে বাধ্য হয়েছে।
এই মানবেতর জীবনযাপনের খবর গত ৮ আগস্ট জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হলে বিষয়টি নজরে আসে উপজেলা প্রেসক্লাব উলিপুরের চার সাংবাদিক—নুর মোহাম্মদ রোকন, মোহাইমিনুল, শাহাজাহান খন্দকার ও সোহেল রানা সিপনের।
তারা নিজস্ব উদ্যোগে রফিকুল পরিবারের হাতে এক সপ্তাহের খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন। এর মধ্যে ছিল চাল, ডাল, তেল, আটা, সুজি, চিড়া, সেমাই, বিস্কুট, সবজি ও মুরগি।
রফিকুল ইসলাম আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন,
“একদিন কাজ করি, সেই টাকায় দুই দিন চলে। অসুস্থ স্ত্রী আর পাঁচটি সন্তান নিয়ে সংসার চালানো খুবই কঠিন। অনেক সময় না খেয়ে থাকতে হয়।”
তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম বলেন,
“ঘরে খাবার না থাকায় কচু ফুল দিয়ে ডাল রান্না করেছিলাম। আজ সাংবাদিক ভাইয়েরা পাশে দাঁড়িয়েছেন, এটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া।”
সহায়তাকারী সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ রোকন জানান,
“আমরা সাংবাদিক হলেও মানুষ হিসেবেই প্রথমে ভাবি। সমাজের বিত্তবানরা যদি এভাবে এগিয়ে আসেন, তবে আর কোনো পরিবারকে অনাহারে দিন কাটাতে হবে না।”
সমাজে অসংখ্য পরিবার প্রতিদিন অন্নের জন্য হাহাকার করছে। কারও সন্তান না খেয়ে ঘুমায়, কারও আবার অল্প বয়সেই পড়াশোনা ছেড়ে কাজে নামতে হয়। তাই সমাজের বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ একটু সহায়তা করুন, একটি পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখতে আপনার সামান্য দানই যথেষ্ট।