কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক অনন্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্মানিত করা হলো এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষায় এ+ প্রাপ্ত প্রায় চার হাজার শিক্ষার্থীকে। শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল ৯টায় উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে উলিপুর উন্নয়ন ফোরামের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এ বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।
সকাল থেকেই শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় সুধীজনদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে কলেজ মাঠ। বর্ণিল সাজে সজ্জিত মঞ্চে একে একে কৃতী শিক্ষার্থীদের হাতে ফুল, ক্রেস্ট ও উপহার তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠান ঘিরে তৈরি হয় উৎসবের আমেজ, যা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য হয়ে ওঠে স্মরণীয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন—
“আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের রাষ্ট্র ও সমাজের নেতৃত্ব দেবে। শুধু ভালো ফল নয়, বরং সততা, আদর্শ ও দেশপ্রেমে গড়ে উঠতে হবে। দেশের উন্নয়নে অবদান রাখাই হবে তাদের প্রকৃত সফলতা।”
তিনি আরও বলেন—
“তুমি কোন পরিবারে জন্মেছ, তা বড় বিষয় নয়। বরং তুমি কোথায় যেতে চাও, কী হতে চাও, সেটিই আসল। কঠোর পরিশ্রম আর আত্মবিশ্বাস দিয়েই স্বপ্ন পূরণ সম্ভব।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের প্রফেসর ড. মো. নিজাম উদ্দীন ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. শাহ্ হোসাইন আহমদ মেহেদী।
ড. নিজাম উদ্দীন বলেন— “ফলাফলই শিক্ষার্থীর একমাত্র পরিচয় নয়; সততা ও জ্ঞানচর্চাই মানুষকে প্রকৃত সফল করে তোলে।”
অন্যদিকে ড. শাহ্ হোসাইন আহমদ মেহেদী বলেন— “গ্রামীণ শিক্ষার্থীরাও চাইলে বিশ্ব অঙ্গনে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করতে পারে। আত্মবিশ্বাস ও কঠোর পরিশ্রম ছাড়া কোনো সাফল্য অর্জন সম্ভব নয়।”
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উলিপুর উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান ও কুড়িগ্রাম-৩ আসনের জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুবুল আলম সালেহী। তিনি বলেন—
“আজ যারা সংবর্ধিত হচ্ছে, তারাই আগামী দিনের সমাজের কান্ডারি হবে। এই সংবর্ধনা তাদের জীবনে নতুন উদ্দীপনা যোগাবে।”
অভিভাবকেরা জানান, সন্তানদের এই অর্জন ও স্বীকৃতি শুধু পরিবারের নয়, বরং পুরো সমাজের জন্য গর্বের। তারা আশা প্রকাশ করেন— এ ধরনের আয়োজন শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় আরও মনোযোগী করবে এবং তাদের সামনে নতুন স্বপ্নের দ্বার উন্মোচন করবে।
আয়োজকদের মতে, এই সংবর্ধনার উদ্দেশ্য কেবল মেধার স্বীকৃতি নয়; বরং শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা।
উলিপুরের সাধারণ মানুষ ও শিক্ষক সমাজ এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।