বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নের কৈগর্দ্দাশকাটি চর এলাকার ৪৫ টি বাড়িঘর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দিন ও রাতে দুইবার প্লাবিত হয়ে বাড়িঘর তলিয়ে জনদূর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। এতে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নের দূর্গম চরাঞ্চল কৈগর্দাসকাটি গ্রাম। ওই এলাকায় প্রায় ৬/৭ শতাধিক পরিবারের সদস্যরা বসবাস করে আসছেন। এর মধ্যে প্রায় ৫০ টি পরিবারের বাড়িঘরের বাইরে নিরাপত্তা বেষ্টনী বেড়িবাঁধ না থাকায় অমাবস্যা ও পূর্ণিমার গোনের সময় অতিরিক্ত জোয়ারে বাড়িঘর তলিয়ে যাচ্ছে। এতে মাছ চাষ, গবাদিপশু পালন, রান্না করা ও বসবাস করা দূরহ হয়ে পড়েছে। শিশুদের লেখাপড়া ও স্কুলে যাতায়াতে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।
চুলাতে পানি উঠে রান্না বন্ধ হওয়ায় খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে বাসিন্দারা। প্রায় দুই কিলোমিটার জুড়ে জোয়ারের পানিতে ডুবে যাওয়ায় ফসলের মাঠ তলিয়ে আমন ধানের চারার ক্ষতি হচ্ছে। সুপেয় পানির কোন ব্যাবস্থা না থাকায় ৪ কিলোমিটার দূর থেকে পায়ে হেঁটে খাবার পানি আনতে হয়। কাছাকাছি কোন টিউবওয়েল বা পানি সরবরাহের ব্যাবস্থা না থাকায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবন যাপন করতে হচ্ছে। যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় শিশুরা স্কুলে যেতে পারে না। তাছাড়া কাছে কোথাও স্কুলও নেই। যারা স্কুলে যায় তাদের কষ্ট করে যাতায়াত করতে হয়। যাওয়ার মত কাছে কোন স্কুলও নেই।
কেউ অসুস্থ হলে আরো বেশী ভোগানি পোহাতে হয়। চলাচলের জন্য এক পায়ের পথটিও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দিনের পর দিন ছোট ছোট ছেলে মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে তাদের দিন কাটছে পরিবার গুলোর। কোন কোন পরিবারের সদস্যদের রাতে ঘুমানোর ও জায়গা টুকুও নেই। কিছু শুকনো খাবার আর নদীর জোয়ারের পানি পান করে তাদের দিন কাটছে। এরা সবাই ভুমিহীন। সরকারি চরভরাটি খাস জমিতে বসবাস করেন। কিন্ত তাদের পাশে দাঁড়ানোর মত কেউ নেই। খুব অসহায় অবস্থায় তাদের দিন কাটছে।
ওই চর এলাকায় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা সরকারি খাস জমি দখল করে মাছ ও ধান চাষ করে আসছে। খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, এই সরকারের সময়ে কতিপয় নেতা নামধারী প্রভাব খাটিয়ে নামে-বেনামে খাস জমি দখল করে ঘের ও মাছ চাষ করে আসছেন।