চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। গতকাল রবিবার ( ৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্যাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক মিছিল ও স্লোগানে দর্শনা এবং এর আশপাশের এলাকায় একটি উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। দর্শনা থানা ও পৌর বিএনপির আয়োজনে। সন্ধ্যা ৬টায় দর্শনা পৌর অডিটরিয়াম চত্বর থেকে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ মিল্টন ও দর্শনা পৌর বিএনপির প্রধান সমন্বয় হাবিবুর রহমান বুলেটের নেতৃত্বে প্রদক্ষিণ শেষে পৌর শহরের শাহরিয়ার শুভ মুক্ত মঞ্চের সামনে এসে শেষ হয়। দর্শনা পৌর বিএনপির আয়োজনে প্রধান সমন্বয় হাবিবুর রহমান বুলেটের সভাপতিত্বে ও পৌর যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক জাহান আলীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ মিল্টন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহবায়ক তারিকুল আলম বিলু, জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সাবু, পৌর বিএনপির সমন্বয়ক কমিটির সদস্য নাহারুল ইসলাম, দর্শনা থানা বিএনপির কৃষকদলের আহবায়ক আশরাফুল হক বিপ্লব,
সাংবাদিক শরীফ উদ্দীন শরীফ, মমিনুল ইসলাম ও দর্শনা সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি হারুন অর রশিদ সহ- যুবদল, শ্রমিক দল, কৃষক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল ও ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, ১৯৭৮ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর বাংলা রাখাল রাজাখ্যাত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিজ হাতে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল বিএনপি’র প্রতিষ্ঠা করেন। সেই থেকে এই দলের নেতাকর্মীরা আজ পর্যন্ত দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের কান্তি কালেও বন্যা জলোচ্ছ্বাস ও মহামারীতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আজকের এই দিনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বারবার স্মরণ করছি।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান অল্প কিছুদিন দেশ সেবা করার সুযোগ পেয়েছিলেন। তিনি যদি দীর্ঘ সময় দেশ সেবার সুযোগ পেতেন তাহলে এদেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতেন। তার সহধর্মিনী আপোষীণ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তিন তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনিও দেশের ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছেন। বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যায়। আগামী নির্বাচনে দল ক্ষমতায় এলে এদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হবে। জিয়াউর রহমান ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বপ্নদ্রষ্টা। তিনি গণতন্ত্রকে উন্মুক্ত করে মানুষের বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ১৯ দফার মাধ্যমে বাংলাদেশ সবুজ শস্য শ্যামল সমৃদ্ধি অর্জন করেছিলেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
বক্তারা আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার মিথ্যা মামলায় আমাদের নেতাকর্মীদের অন্ধকার কারাগারে আটকে রেখেছিল। বৈষম বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে আমাদের নেতাকর্মীরা যোগ দিয়ে আন্দোলনকে বেগবান করেছিল। গোটা দেশটাকে একটি কারাগারে পরিণত করেছিল। আজকে দেশ স্বাধীন হয়েছে, আমরা হয়েছি মুক্ত। আগামী নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা ২ আসন ফিরিয়ে আনতে সকল নেতাকর্মীকে একযোগে কাজ করতে হবে। আমরা জেলখানায় নিদারুন কষ্ট করেছি। মানবতর জীবন যাপন করেছি। রাজনৈতিক সহকর্মীরা দীর্ঘ ১৬ বছর তাদের বাড়িতে থাকতে পারেননি। পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় অনেকে আহত হয়েছে। আক্রমণের শিকার হয়ে কেউ কেউ মারা গিয়েছে। সকল দ্বিধাদন্ড ও মনের কষ্ট ভুলে দলকে এগিয়ে নিতে কাজ করতে হব বক্তারা আরও বলেন, গুপ্ত বাহিনী সারাদেশে ষড়যন্ত্রের জাল তৈরি করছে।
তারা তারেক রহমানসহ বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলেছে। তারাই অদৃশ্য শক্তিকে নিয়ে ফায়দা লুটতে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তাদের এসব অপকর্ম রুখে দেয়া হবে বলে হুশিয়ারি জানিয়ে জনগণকে বোকা বানিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা যাবেনা বলে জানান। বক্তারা আরও বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠা করা এই দলটি শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়, বরং এটি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের একটি আপসহীন সংগ্রামী প্ল্যাটফর্ম। তাঁরা জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও আইনের শাসন ফিরিয়ে আনার দর্শনা থানা বিএনপি দলের প্রতিটি নেতাকর্মীকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। নেতারা আরও বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আগামী রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান কতৃক ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া থেকেও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন ও সুখী বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। এছাড়া, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীককে বিজয়ী করতে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাওয়ারও ঘোষণা দেন নেতৃবৃন্দ।