Crime News tv 24
ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৩ জুলাই ২০২৫
  1. অন্যন্য
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলা
  5. জাতীয়
  6. দেশজুড়ে
  7. ধর্ম
  8. ফিচার
  9. বাংলাদেশ
  10. বিনোদন
  11. মতামত
  12. রাজনীতি
  13. রান্না
  14. রাশিফল
  15. লাইফস্টাইল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মধুপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা লাকী’র আত্মহত্যার রহস্য উন্মোচন।

Link Copied!

টাঙ্গাইলের মধুপুরের কুড়ালিয়া ইউনিয়নের কেউটাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা লুৎফুন্নাহার লাকী এর আত্মহত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। তার আত্মহত্যার পিছনের প্রতারক সহকারী শিক্ষক ইবনে মাসুদ। মিথ্যা প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক পরবর্তীতে অন্তঃসত্ত্বা লাকীকে বিয়ে না করার কারণে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে এমন তথ্য লাকীর লেখা একটি ডায়েরিতে পাওয়া গেছে।

লুৎফুন্নাহার লাকী উপজেলার আউশনারা ইউনিয়নের হলুদিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফের বড় মেয়ে। লাকী আক্তারের বাবা আব্দুল লতিফের জন্মস্থান উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামে। সে দীর্ঘ প্রায় বিশ বছর যাবত স্বপরিবারে হলুদিয়া গ্রামে বসবাস করেন। এখান থেকেই বেড়ে ওঠা লাকি আক্তার গত ২৪ জুন তার নিজ কক্ষে আত্মহত্যার জন্য কীটনাশক পান করেন।
পরবর্তীতে তাঁকে দ্রুত মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তিনদিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে গত ২৭ জুন তিনি শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন।
তার এ অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর বেড়িয়ে আসে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য। লাকী আক্তারের থাকার কক্ষে পাওয়া যায় একটি ডায়েরি আর সেই ডায়েরি খুলতেই চোখ পড়ে তার লেখা পাঁচটি পাতায় আত্মহত্যার আসল রহস্য। ডায়েরির পাতায় লেখা প্রতিটি শব্দে ছিলো বিষাদের সুর। ২০২৪ সালে প্রশিক্ষনে গিয়ে পরিচয় হয় গোপিনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইবনে মাসুদের সাথে। মাসুদ সুকৌশলে অল্প সময়ের মধ্যে সহজসরল লাকি আক্তারকে তার প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। সর্বশেষ দীর্ঘ প্রায় ২বছরের প্রেমের অবৈধ ফসল এসে বাসা বাঁধে লাকির গর্ভে। লোকলজ্জার ভয়ে কোনো উপায়ন্তর না দেখে বিয়ে করার জন্য মাসুদকে অনুরোধ জানায়। বিয়ের কথা শুনে মাসুদের নিজের বিয়ে করা বউয়ের কথা মনে পড়ে যায়। তখন লাকি হয়ে যায় গানের কলি আর টিকটকের নায়িকার নাম।
সর্বশেয লাকি আক্তার এ পৃথিবীতে সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য ছুটে যান মাসুদের কাছে কিন্তু মাসুদ-সাব জানিয়ে দেন, আমি বিবাহিত কোনো ভাবেই তোমাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়।
হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে এসে লাকি তার ডায়েরির পাতায় মাসুদের প্রতারনার ইতিহাস তুলে ধরেন, তিনি লিখেন, পৃথিবীতে মৃত্যু যন্ত্রণা সহ্য করে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো। লাকী আক্তার ডায়োরীতে আত্মহত্যার আগ মুহুর্তে লিখেছেন
আজ বিকেল পর্যন্তও বেঁচে থাকার ইচ্ছে মনের গভীর কোণে উঁকি দিয়ে ছিলো কিন্তু তোমার অবজ্ঞার কারণে আজ আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললাম।
তুমি জানতে তোমার বাসা থেকে বের হওয়ার পর আমি কোনো দুর্ঘটনা নিশ্চিত ঘটাবো তবুও আমাকে আটকালে না। তুমি চাচ্ছো আমি মরে যাই আর তুমি জগৎ সংসার নিয়ে সুখে থাকবে? আমি এখন পোকা মারার বিষ খাব।
এভাবেই প্রতারক মাসুদের বিরুদ্ধে ডায়েরির পাঁচ পাতায় অভিযোগ লিখে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন স্কুল শিক্ষিকা লুৎফুন্নাহার লাকি।
আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে লাকীর আক্তারের বাবা আব্দুল লতিফ ইবনে মাসুদের নামে গত ২৮ জুন মধুপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এবিষয়ে মধুপুর থানা ইনচার্জ এমরানুল কবীর রুবেল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিয়ের প্রলোভন দিয়ে মাসুদ শিক্ষিকার সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং এক পর্ষায়ে সে গর্ভবতী হলে মাসুদকে বিয়ে করতে বলে কিন্তু সে বিয়ে করতে অপারগতা প্রকাশ করলে শিক্ষিকা লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আত্মহত্যার প্ররোচনায় দায়ে ইবনে মাসুদের নামে মামলা হয়েছে, তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।