Crime News tv 24
ঢাকারবিবার , ১১ মে ২০২৫
  1. অন্যন্য
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলা
  5. জাতীয়
  6. দেশজুড়ে
  7. ধর্ম
  8. ফিচার
  9. বাংলাদেশ
  10. বিনোদন
  11. মতামত
  12. রাজনীতি
  13. রান্না
  14. রাশিফল
  15. লাইফস্টাইল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সাংবাদিকদের জন্য আশার আলো নতুন যুগে পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সরকারের পদক্ষেপ।

admin
মে ১১, ২০২৫ ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

এইচ এম এরশাদ আন্তর্জাতিক সংবাদদাতা:-
দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশে সাংবাদিকতা পেশা এক ধরনের নিয়ন্ত্রিত ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিসরে আবদ্ধ ছিল। বিশেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ ক্ষুণ্ণ হয়েছিল। সত্য প্রকাশের চেষ্টা করা হতো অপরাধ বলে গণ্য, আর কলম ধরলেই পড়তে হতো হয়রানির মুখে। দুর্নীতি, অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহার—এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে বহু সাংবাদিককে হারাতে হয়েছে চাকরি, সম্মান ও নিরাপত্তা।

এক সময় দেশে এমন এক ভীতিকর সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল, যেখানে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ ছিল একটি প্রতিষ্ঠিত প্রক্রিয়া। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা বিধিনিষেধ ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ ছিল সাংবাদিকতার পথে বড় বাধা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ‘স্বাধীনতা দিবসে মাছ-মাংস আর চাউলের স্বাধীনতা চাই’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় গ্রেফতার হন সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামস। একইভাবে, তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে নিপীড়নের শিকার হন সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম।

রাষ্ট্রীয় তথ্যানুযায়ী, গত ১৫ বছরে দেশে প্রায় ৪ হাজার সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, যার মধ্যে ৬৩ জন খুন হয়েছেন শুধুমাত্র তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য। এমন এক বাস্তবতায়, দেশের সাংবাদিক সমাজ দীর্ঘদিন ধরে পেশাগত সুরক্ষা ও স্বাধীনতার দাবি জানিয়ে আসছিল।

পরিবর্তনের হাওয়া: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠনমূলক পদক্ষেপ

সাম্প্রতিক সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সাংবাদিকদের পেশাগত স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এক গঠনমূলক ও সাংবাদিক-বান্ধব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গঠন করা হয়েছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন, যার প্রধান কামাল আহমেদ বলেছেন, “কোনো সাংবাদিককে হয়রানি, ব্ল্যাকমেইল বা হুমকি দেওয়া যাবে না। ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া যাবে না।”

নতুন আইন অনুযায়ী, কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা সরাসরি পুলিশ বা নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে নয়, বরং সেই সাংবাদিকের প্রতিষ্ঠানকে লিখিতভাবে জানাতে হবে। এরপর গণমাধ্যমের অভ্যন্তরীণ তদন্ত ও প্রতিক্রিয়া অনুসরণ করেই আইনি প্রক্রিয়া চালানো যাবে।

এছাড়া সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। বেতন বকেয়া ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে সাংবাদিকদের ভোগান্তি ঠেকাতে নেওয়া হচ্ছে কার্যকর পদক্ষেপ। তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামুল কবীর বলেন, “অনেক প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ হয়ে আছে বা মাসের পর মাস সাংবাদিকদের বেতন দেওয়া হচ্ছে না। এটা বন্ধ করতে কার্যকর ব্যবস্থা প্রয়োজন।”

প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুছ জানিয়েছেন, এই আইন ও নীতিমালা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে এবং তা চলমান রয়েছে।

সাংবাদিকদের বার্তা: স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিন

এই পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে সাংবাদিক সমাজ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছে—সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধ করুন, স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিন, এবং সত্য প্রকাশের অধিকার রক্ষা করুন। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন তিনি তার সহানুভূতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি ও আইনি সহায়তার মাধ্যমে সাংবাদিকদের পাশে থাকেন।

সাংবাদিকরা বলেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে নই। আমরা দেশের পক্ষে, জনগণের পক্ষে। আমরা আমাদের মত করে বাঁচতে চাই, সত্য লিখে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করে দেশের জন্য কাজ করে মরতে চাই।”

এই উদ্যোগ সাংবাদিক সমাজের জন্য আশার আলো হয়ে এসেছে। আশা করা যায়, নতুন আইন ও পদক্ষেপের মাধ্যমে একটি মুক্ত, নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ সাংবাদিকতা চর্চার পরিবেশ প্রতিষ্ঠা পাবে।