Crime News tv 24
ঢাকাশনিবার , ২৮ জুন ২০২৫
  1. অন্যন্য
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলা
  5. জাতীয়
  6. দেশজুড়ে
  7. ধর্ম
  8. ফিচার
  9. বাংলাদেশ
  10. বিনোদন
  11. মতামত
  12. রাজনীতি
  13. রান্না
  14. রাশিফল
  15. লাইফস্টাইল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রূপগঞ্জের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি।

রূপগঞ্জ(নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি:-
জুন ২৮, ২০২৫ ৭:১৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মাদক ব্যবসা বন্ধ, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। দেশ স্বাধীনের পর উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের ৫/৬টি গ্রামে অর্ধশতাধিক মানুষকে খুন করা হয়েছে। এদের অধিকাংশকেই অবৈধ অস্ত্রের গুলিতে হত্যা করা হয়। মাঝেমধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হলেও আশানুরুপ অস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি। হত্যাকান্ডের বিচার না হওয়ায় সন্ত্রাসীরা ছোটখাটো বিরোধেই প্রতিপক্ষের লোকজনদের গুলি করে হত্যা করছে। কখনো কখনো ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। আবার কখনোবা ভারাটে সন্ত্রাসীর গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটছে।

রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের আয়তন ২হাজার ১৮৪ একর। ২৭গ্রামের লোকসংখ্যা ৫৮ হাজার ২০০জন। এখানে উপজেলা পরিষদ, সরকারি মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজ, শতবর্ষীয় সরকারি মুড়াপাড়া পাইলট স্কুল, নারী শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র সহিতুন্নেছা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও উপজেলা কমপ্লেক্স অবস্থিত। এছাড়া এখানে বেশ কিছু শিল্প কারখানা রয়েছে। মুড়াপাড়া শিল্প নগরী হিসেবেও পরিচিত। সেই মুড়াপাড়া এখন স্বজন হারানো লোকদের কান্নার নগরীতে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিবছরই বাড়ছে স্বজন হারানো মানুষের সংখ্যা। মাদক ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে সন্ত্রাসীরাও পরিবর্তন হয়ে যায়। তাই রাজনৈতিক আশ্রয়ে সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠে। সর্বশেষ গত ২৭জুন রাতে মুড়াপাড়ার মাহমুদাবাদ টঙ্গীরঘাট এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে ইয়াছিন মিয়া(২৬) ও টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে শিপন(৩৪) গুলিবিদ্ধ হয়। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির দু’টি খোসা উদ্ধার করেছে। এছাড়া ভুলতা, গোলাকান্দাইল ও তারাবো এলাকায় ঘটছে গুলিবর্ষণের ঘটনা। তাতে হতাহতের সংখ্যাও কম নয়।
পুলিশ জানায়, ১৯৭২ সালে গুলি করে ব্রাহ্মণগাঁওয়ের লাল মিয়াকে হত্যা করা হয়। মুড়াপাড়া ইউনিয়ন তারা মিয়াকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২০০৮ সালে মীরকুটিরছেঁও এলাকায় যুবলীগ নেতা নয়নকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২০০৫ সালে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিককে। ২০০০ সালের ২৬আগস্ট মুড়াপাড়া রাসেল পার্কের প্রতিষ্ঠাতা শিল্পপতি রাসেল ভুঁইয়াকে তাঁর পার্কের ভেতরে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। ১৯৯৭ সালে গুলি করে হত্যা করা হয় যুবলীগকর্মী তারেক-বিন-জামালকে। ১৯৯০ সালে মুড়াপাড়া কলেজের ভিপি খালেদ-বিন-জামালকে বানিয়াদি এলাকায় গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়াও বেশ কয়েকজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
প্রতিটি হত্যাকা-ে একাধিক পক্ষ জড়িত থাকে। এক বা দু’টি পক্ষ অর্থ জোগান দেয়। অপর পক্ষ রাজনৈতিক আশ্রয় নিশ্চিত করে। আরেক পক্ষ আসামীদের বাঁচাতে কলাকৌশল অবলম্বন করে। হত্যাকা-ের নেপথ্যে থাকা ব্যক্তি খুনিদের ভাড়া করার জন্য বেশ কয়েকটি হাত কাজে লাগায়। ফলে পরিকল্পনাকারীকে বেশির ভাগ সময় শনাক্ত করতে পারে না পুলিশ। আবার অনেক রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধি আধিপত্য ধরে রাখতে এক পক্ষকে আরেক পক্ষের ওপর লেলিয়ে দিয়ে হত্যাকা- ঘটায়। পরে ওই নেতা বা জনপ্রতিনিধি জরিমানা বা সামাজিকভাবে বিভিন্ন চাপের মুখে ফেলে মামলা নিষ্পত্তি করে। ফলে বেশির ভাগ মামলার আসামীরা শাস্তির বাইরে থাকে। সুযোঘ পেয়ে সন্ত্রাসীরা আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠে।
হত্যাকা-ের সঙ্গে এক বা একাধিক প্রভাবশালী পরিবার বা ব্যক্তি জড়িত থাকায় মামলাগুলো আর এগোয় না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আসামীরা ধরা পড়লেও সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শাস্তি না হওয়ায় খুনিরা পরে বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
মুড়াপাড়ার বিএনপি নেতা ইমান আলী বলেন, ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ, যুবলীগ নেতা হীরা মিয়াসহ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করা হলেও কোন অস্ত্র উদ্ধার করা হয়নি।
টঙ্গীরঘাট এলাকার ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, হত্যাকা- একটি জঘন্যতম অপরাধ, যারা এসব হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
মাছিমপুর এলাকার বিশ^বিদ্যালয় পড়–য়া ছাত্র রাকিব হাসান বলেন, মানুষ হত্যা একটি নিন্দনীয় কাজ। এসব হত্যাকা-ের সুবিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।
রূপগঞ্জ থানা ওসি মোঃ তারিকুল ইসলাম বলেন, হত্যাকা-ের বিচার আদালতের এখতিয়ার। আমি রূপগঞ্জ থানায় চলতি মাসে যোগদান করেছি। তবে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে ছাড় দেওয়া হবে না। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক ব্যবসা বন্ধসহ সকল সন্ত্রাসীদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, শান্তি শৃঙ্খলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম বলেন, মাদক ব্যবসা বন্ধ, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।