কুড়িগ্রামের উলিপুরে বুড়ি তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন গড় কেটে মাটি বিক্রি বন্ধ করে, নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত ও দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে পরিবেশবাদী যুব সংগঠন গ্রীন ভয়েস ও (বাপা) উলিপুর উপজেলা শাখা। সোমবার (৫ মে) সকাল ১১টায় উলিপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে সামনে গ্রীন ভয়েস, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এবং তিস্তা নদী রক্ষা কমিটি, কুড়িগ্রাম–এর যৌথ উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের পরিবেশ আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও সচেতন নাগরিকেরা অংশগ্রহণ করেন।
উলিপুরের মানুষের দীর্ঘ আন্দোলন ও সংগ্রামের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বুড়িতিস্তা ডেলটা প্ল্যান কর্মসূচির আওতায় ১৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ৮০ ফুট প্রস্থ ও ৩১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যব্যাপী খনন কাজ শুরু করে কাজ সমাপ্তির আগেই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচুত্য হয়ে ভারত পালিয়ে যায়, এ সুযোগে কিছু অসাধু মহল বালু ও মাটি বিক্রিতে মরিয়া হয়ে উঠে।
বুড়ি-তিস্তা নদীর প্রাণ রক্ষা করতে এগিয়ে আসে সেচ্ছাসেবী সংগঠন গ্রীন ভয়েস উলিপুর শাখার উপদেষ্টা রফিকুল আনছারী, রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক রবিউল ইসলাম রুবেল, কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নুরনবী সরকার।
এছাড়া বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুড়িগ্রাম জেলার সদস্য মতলেবুর রহমান, সাবেক ছাত্র নেতা ফিরোজ কবির কাজল সদস্য বাপা উলিপুর উপজেলা শাখা,
মানববন্ধনের সঞ্চালনায় ছিলেন গ্রীন ভয়েস উলিপুর শাখার যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক সারফারাজ সৌরভ।
বক্তারা বলেন, “আছে যত নদী খেকো সবাই মিলে তাদের রুখো” “বুড়ি তিস্তা আমাদের প্রাণ, অথচ আজ অবৈধ বালু উত্তোলন মাটি বিক্রি, দখল আর অনিয়মের কারণে নদী ধ্বংসের মুখে। প্রশাসন এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে নীরব রয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
তারা নদী রক্ষায় প্রশাসনের দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানান।
এসময় গ্রীন ভয়েসের পক্ষ থেকে রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক রবিউল ইসলাম রুবেল ৫ দফা দাবি উত্থাপন করেন:
দাবিসমূহ:
১. দিনে কিংবা রাতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে।
২. নদীর তলদেশ খনন করে স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।
৩. অবিলম্বে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে।
৪. বুড়ি তিস্তা নদীর উৎসমুখে খনন কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. অবৈধ বালু উত্তোলন ও দখলদারদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
মানববন্ধনে গ্রীন ভয়েস উলিপুরের সবুজ নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বাপা, তিস্তা নদী রক্ষা কমিটি ও পরিবেশপ্রেমী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা হুঁশিয়ার করে বলেন, “দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তবে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।”
এবিষয়ে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার সাহা জানান বালু উত্তলন ও মাটি বিক্রির অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।