Crime News tv 24
ঢাকাশনিবার , ২৫ অক্টোবর ২০২৫
  1. অন্যন্য
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলা
  5. জাতীয়
  6. দেশজুড়ে
  7. ধর্ম
  8. ফিচার
  9. বাংলাদেশ
  10. বিনোদন
  11. মতামত
  12. রাজনীতি
  13. রান্না
  14. রাশিফল
  15. লাইফস্টাইল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মাগুরায় নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনের দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার চরম পর্যায়ে।

তৌহিদ,মাগুরা জেলা প্রতিনিধি:-
অক্টোবর ২৫, ২০২৫ ৩:৫৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একের পর এক দুর্নীতি, অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে তোলপাড় শুরু হয়েছে পুরো মাগুরা জেলা জুড়ে। বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেন দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক, কর্মচারী ও প্রধান শিক্ষককে ভয়ভীতি ও প্রভাব খাটিয়ে তার নিয়ন্ত্রণে রেখে আসছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকমণ্ডলীর একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন,”আমরা এতদিন এই সহকারী প্রধান শিক্ষকের ভয়ে মুখ খুলতে পারিনি। তিনি প্রশাসনিক ক্ষমতা দেখিয়ে আমাদের জিম্মি করে রেখেছিলেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ এবং কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমরা এখন বাধ্য হয়েছি তার সব অনিয়মের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে।” বিদ্যালয়ের গুদামঘর দখল থেকে শুরু করে তিনি ধীরেধীরে অনিয়মের পাহাড় গড়ে তুলেছেন।

অভিযোগে জানা যায়, ২০০৩ সালে বিদ্যালয়ের একটি গুদামঘর বিনা চুক্তিতে জোরপূর্বক দখল করে সেখানে সুদের ব্যবসা ও অন্যান্য অনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে আসেন মুনীর হোসেন। দীর্ঘ ১৫ বছর সেই ঘর দখলে রেখে কোন ভাড়া না দিয়ে অবৈধভাবে ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে দোতলা মার্কেট নির্মাণের সময় সেই ঘরের পজিশন নিজের দাবি করে এক ব্যবসায়ীর কাছে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হিসেবে ২০০৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত গুদামঘরের ভাড়া বাবদ ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা এবং বিক্রিত অর্থসহ মোট ৮ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা বিদ্যালয়ের পাওনা রয়েছে তার কাছে। জরিমানার টাকা আত্মসাৎ ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে চাঁদাবাজি
সম্পর্কে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, ছাত্র-ছাত্রীদের অনুপস্থিতির জন্য আদায়কৃত জরিমানার টাকা (৭৫,০০০ টাকা) দীর্ঘদিন নিজের কাছে রেখে দেন মুনীর হোসেন। পরবর্তীতে সামান্য কিছু ময়লার ঝুড়ি কিনে বাকি টাকার হিসাব আর দেননি।

তাছাড়া, বিদ্যালয়ে পরিচালিত উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউটোরিয়াল কেন্দ্রের ছাত্রদের কাছ থেকেও চাঁদা আদায় ও পরীক্ষার হলে প্রশ্নের উত্তর বোর্ডে লিখে দেওয়ার নামে বিপুল অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। একাধিক প্রাক্তন ছাত্র জানিয়েছেন, প্রতি বছর কয়েক লক্ষ টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করা হতো এই কেন্দ্র থেকে। ছাত্রদের খেলাধুলার তহবিলেও হাত দিতে ছাড়েননি তিনি।বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ফুটবল টুর্নামেন্ট পরিচালনার জন্য ছাত্রদের কাছ থেকে সংগৃহীত ৪,৮০০ টাকার তহবিলও জোর করে আত্মসাৎ করেন মুনীর হোসেন — যা আজও ফেরত দেওয়া হয়নি বলে জানা যায়।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে ক্লাস ফাঁকি ও প্রধান শিক্ষকের উপর হামলার অভিযোগ রয়েছে।অভিযোগে বলা হয়, তিনি নিয়মিত ক্লাস না নিয়ে মাগুরা শহরে গিয়ে প্রাইভেট পড়ান। প্রধান শিক্ষক জনাব শেখ আ. মান্নান এ বিষয়ে বাধা দিলে তাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেন এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট একদল লোকজন এনে প্রধান শিক্ষকের উপর হামলা চালিয়ে তার মোবাইল ফোন ও বোর্ডের সিম জব্দ করেন বলে জানা গেছে।

প্রধান শিক্ষক হতে না পেরে করছেন বিস্তর ষড়যন্ত্র।বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন,“সহকারী প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রধান শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে তিনি বিদ্যালয়ের পরিবেশ অস্থিতিশীল করে তোলেন এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলেন।”

বর্তমানে শিক্ষক-ছাত্রদের বিক্ষোভ ও অভিভাবকদের নানামুখী প্রশ্নের উত্তর না দিতে পেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মুনীর হোসেন। অভিযোগ প্রকাশের পর বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এলাকাবাসীও ক্ষোভ প্রকাশ করে। একপর্যায়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেন ও এডহক কমিটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসেন শিপন এলাকা ছেড়ে পলাতক হন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

সবশেষে অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সহকারী প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনকে পাওয়া যায়নি।স্হানীয় জনসাধারণ চাইছে খুবই দ্রুততম সময়েের মধ্যে বিষয়টির ফয়সালা হওয়া প্রয়োজন। তা নাহলে আমাদের সন্তান অথ্যাৎ এই স্কুলের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার উপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। যা আমাদের কারোই কাম্য নয়।