জীবননগরে রহস্যজনকভাবে আহত সেই বিপ্লব হোসেন ওরফে ওয়াজ মারা গেছেন। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকায় এ ওয়ান হাসপাতালের আইসিইউতে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বিপ্লব হোসেন ওয়াজ জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের গয়েশপুর গ্রামের চাঁদ মিয়া (বুড়ো) ছেলে। পরিবারের দাবি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত সোমবার ভোর ৪টার দিকে ৯৯৯-এ কল পেয়ে জীবননগর থানা-পুলিশ গয়েশপুর গ্রামের চাঁদ মিয়া ওরফে বুড়োর ছেলে বিপ্লবকে সীমান্ত ইউনিয়নের গয়েশপুর বিল কাশারির মাঠের রাস্তার পাশ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করান, সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসার শেষে অজ্ঞান অবস্থায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে যশোর ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে পরে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়।
ঢাকায় এ ওয়ান হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত বিপ্লবের স্ত্রী নাজেরা খাতুনের একটি ভিডিও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে জানা যায়, যশোর থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে তার স্বামীর একবার জ্ঞান ফিরেছিল।
এ সময় কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল জানতে চাইলে তার স্বামী তাকে জানান, বাবলু, সুলতান, তরিকুলসহ আরও কয়েকজন মিলে তাকে এই অবস্থা করেছে। জীবননগর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মঈন উদ্দিন ময়েন বলেন, বিপ্লব তাকে বাবা বলে ডাকত। ছোট থাকতে তার বাবা মারা যায়। তারপর থেকে আমি তাকে মানুষ করেছি। সে আমার সন্তানের মতো করে থাকতো। বেশ কিছু দিন যাবৎ সে অসুস্থ ছিল। তাকে আমি চিকিৎসাও করাচ্ছিলাম। আমি তার হত্যার বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত তরিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ওয়াজ এই ছেলেটা আমি যতটুকু জানতাম সে বিদেশে ছিলো, সে দেশে কবে এসেছে আমি জানিনা এবং এটা সড়ক দুর্ঘটনা নাকি মার্ডার সেটা প্রশাসনের দায়িত্ব খুঁজে বের করার। প্রশাসন তদন্ত করে এঘটনা খুঁজে বের করবে। কিন্তু ময়েনের সাথে আমার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগতভবে রেষারেষি আছে সে-ই কারণে সে পরিকল্পিত ভাবে এই ঘটনায় আমার নাম জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এবং জীবননগর বাসী ও আমার দলের যেসব ভাই ও নেতাকর্মী আছে তারা সবাই জানে আমি কেমন ছেলে। আর যে ছেলের সাথে আমার নুন্যতম সম্পর্ক নেই ওঠাবসা নেই সেই ছেলে সাথে সম্পর্ক খারাপ হওয়া তো দূরে থাক তার সাথে আমার কোন সম্পর্কই নেই তো সেও ছেলের আমি একটা চড় মারবো কি কারণে মার্ডার করা তো দূরে থাক।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন হোসেন বিশ্বাস জানান, গত সোমবার ভোরে ৯৯৯ কল পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করায় সেখানে থেকে যশোর তারপর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এটা হত্যা না কি সড়ক দূর্ঘটনার এবিষয়ে জানতে চাইলে ওসি জানান, প্রথমে ইটভাটার কিছু শ্রমিক ঘটনাস্থলে আহত অবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখতে পেয়ে ৯৯৯-এ কল দেন। সেখানে আমরা উপস্থিত হয়ে তাদের ভাষ্যমতে জানতে পারি এটি সড়ক দূর্ঘটনা।
তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে, এ বিপ্লব হোসেন ওয়াজে মৃত্যু নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠছে এটা হত্যা না সড়ক দূর্ঘটনা? তাকে যদি হত্যায় করা হয় তবে তাকে কেনই বা কারা মারলো? এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।