Crime News tv 24
ঢাকাসোমবার , ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  1. অন্যন্য
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলা
  5. জাতীয়
  6. দেশজুড়ে
  7. ধর্ম
  8. ফিচার
  9. বাংলাদেশ
  10. বিনোদন
  11. মতামত
  12. রাজনীতি
  13. রান্না
  14. রাশিফল
  15. লাইফস্টাইল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মৌলভীবাজারে নেশাগ্রস্ত বাবার হাতে শিশু সন্তান খুন, ঘাতক বাবাকে আটক করেছে পুলিশ -১ম পর্ব

মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী, ক্রাইম রিপোর্টার :
ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৫ ৩:১৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলায় বাবার হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছে মাহিদ নামের ৭ বছর বয়সী এক শিশু সন্তান । ঘটনার পর নিহত শিশু মাহিদ (৭) এর বাবা খোাকন মিয়া ও দাদি হাওয়া বেগম নিজ ঘরে লাশ রেখে গাঁ ঢাকা দিয়েছিলেন।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পূর্বে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের জগন্নাথপুর গ্রামে লোহমর্ষক উক্ত ঘটনা। এ ঘটনার পর পুরো এলাকা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। শিশু খুনের ঘটনায় পুরো গ্রামের শোকের ছায়া নেমে পড়ে।

মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মাহবুবুর রহমান এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ প্রতিবেদককে জানান, এই ঘটনায় সদর উপজেলার গুমড়া জেলগেট এলাকা থেকে খোকন মিয়াকে অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খোকন মিয়া চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবী। সে দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসা ও সেবন করে আসছিল। রবিবার বিকালে খোকনের দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভের সন্তান শিশু মাহিদ (৭) বিছানায় মল ত্যাগ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরের বাহিরে এনে ব্যাপকভাকে পিটাতে থাকে ঘাতক পিতা খোকন মিয়া এমনটাই স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।

এক পর্যায়ে শিশু মাহিদ সেখান থেকে পালিয়ে প্রতিবেশি যাবেদা খাতুন এর ঘরে আশ্রয় নিলে সেখান থেকে আবারও ধরে এনে উপর থেকে মাটিতে ছুড়ে মাড়েন। এরপর শিশু মাহিদের দুই পা ধরে কংক্রিটের পিলারে সাথে আছাড় দিতে থাকলে শিশু মাহিদের নাক দিয়ে রক্ত ঝরতে শুরু করে।

এ সময় প্রতিবেশি যাবেদা বেগম শিশুটিকে রক্ষা করতেও ব্যর্থ হন। এমন পরিস্থিতিতে শিশুটির অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়া খোকন মিয়া নিজেই শিশু মাহিদকে নিয়ে হাজির হন মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে। পরে সেখানকার দ্বায়িত্বরত ডাক্তার তাঁকে মৃত ঘোষনা করেন। এসময় শিশুটির মৃত্যুও কারণ নিয়েও চতুরতার আশ্রয় নেয় ঘাতক পিতা খোকন মিয়া।

মৃত্যুর কারণ সেখানে উল্লেখ করে গাছ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে বলে। এর পর সেখান থেকে লাশ নিয়ে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সদর মডেল থানা পুলিশ উপস্থিত হলেও সেখানে লাশ ও খোকন মিয়াকে পাওয়া যায়নি।

কিছুক্ষণ পর লাশ নিয়ে খোকন নিজ ঘরে হাজির হয়ে সেখানে লাশ রেখেই চলে যায়। তবে তার প্রথম স্ত্রী ও নিহত শিশু মাহিদ এর আরেক ভাইকে ঘরেই পাওয়া যায়। আশপাশে তল্লাশি চালিয়েও পুলিশ সেখানে খোকন ও তার মা হাওয়া বেগমের কোন খোঁজ না পেয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার জেলগেট এলাকা থেকে খোকন মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন ।

 

প্রতিবেশি যাবেদা বেগম জানান, বাচ্চাটাকে দুই ঠেং ধরে কংক্রিটের পিলারের সাথে মাথা মারতে থাকে। তখন তাঁর নাক দিয়ে রক্ত পড়ছিল। মারধর করার সময় তাঁকে উদ্ধারে আমি এগিয়ে গেলে আমাকে অন্তত দশহাত দূরে টেনে নিয়ে যায়। তবে এসময় অন্য কেউ সেখানে ছিলনা বলে জানান ঐ প্রত্যক্ষদর্শী নারী যাবেদা বেগম ।

 

জানা যায়, ১৫ বছর আগে প্রথম স্ত্রী রেখে তানিয়া আক্তার নামে এক নারীকে বিবাহ করে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তুলেন খোকন মিয়া ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায় খোকনের ২য় স্ত্রী তানিয়া আক্তার কয়েক বছর পূর্বে স্বামী খোকন মিয়া ও দুই সন্তান রেখে পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে বড়লেখার জৈনক মাদক ব্যবসায়ীর সাথে চলে যায়।

সূত্রটি আরো জানায়, মাহিদ (৭) ও রাফিদ (৬) বছর বয়সী দুই শিশুকে নিজের কাছে রেখে লালন পালন করেন খোকন।

এরপর থেকে মা ছাড়া বাবা খোকন মিয়ার কাছেই থাকত দুই শিশু। স্থানীয়রা বলছেন অনেক দিন যাবত তুচ্ছ কারণে তাদের দুই ভাইয়ের প্রতি অমানবিক নির্যাতন চালাতেন মাদকাসক্ত বাবা খোকন মিয়া। নির্যাতনের নির্মম দৃশ্য প্রতিবেশির চোখে ধরা পড়লেও ভয়ে তাদের কেউ এগিয়ে আসার সাহস করেনি।

এছাড়া বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানা যায়, বেশ কয়েকবছর পূর্বে দ্বিতীয় স্ত্রী তানিয়া আক্তারকে নিয়ে সাবেক সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী মরহুম এম মহসিন আলীর বাড়িতে থাকতো এবং সেখানে কাজ করতো। আর সেখানেই দ্বিতীয় স্ত্রী তানিয়া আক্তার দুই শিশু সন্তানকে রেখে জৈনক প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ীর সাথে চলে যায়।

সূত্র থেকে আরো জানা যায় দীর্ঘদিন থেকে দ্বিতীয় স্ত্রী তানিয়াকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় ছিল নেশাগ্রস্ত ঘাতক খোকন মিয়া। হঠাৎ করেই এমন ঘটনা আশ্চর্য জনক।

অনুসন্ধান চলমান ২য় পর্বে আসছে আরো বিস্তারিত!