পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় জায়গা দখল ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে গাজ্জাল মুন্সী (৩৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ২০ জন আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গতপরশু বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফরিদপুর উপজেলার মাছুয়াঘাটা সরকারি বাঁধ এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত গাজ্জাল মুন্সী মৃত রমজান মুন্সীর ছেলে। ঘটনার পরের দিন (২৪ অক্টোবর) গতকাল শুক্রবার রবি প্রামানিকের ছেলের সুন্নাতে খৎনা অনুষ্ঠান উপলক্ষে এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল ৩/৪ দিন ধরে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে দুধ আনতে যাওয়ার সময় সরকারি বাঁধের উপরে হাজী আবুল কাশেমের ছেলে মকলেস (৪৫) নেতৃত্বাধীন বাহিনী গাজ্জাল মুন্সীর উপর হামলা চালায়।
এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে নির্দেশনা ও উসকানি দেন মাছুয়াঘাটা গ্রামের মৃত ইউনুস মোল্লার ছেলে মেহেদী হাসান তপন (৪৯) ও মেহেদী হাসান কালু মোল্লা (৪২), সুইট (৩৭), মিলন ওরফে ধলা (২৭) পিতা হাকিম (গ্রেফতার) দুলাল ওরফে বাবু পুলিশ (৩৭), নয়ন (৩২) পিতা আব্দুর রহিম, রকিব (২৭) পিতা তফিজ ব্যাপারী, হাকিম বীর (৫৫), ওমর (৪৮) পিতা মৃত কালু মোল্লা, জুয়েল (৩৫), হালিম (৪৩) পিতা ইসাক মোল্লা, সফি (৪২), মমিন (৩৮) পিতা আব্দুল আজিজ, রমজান (৫০) পিতা মৃত মসলেম মোল্লা, জাহাঙ্গীর (৫৭), জিন্নাহ (৪২) পিতা মৃত নসু মোল্লা, নাহিদ (২২) পিতা ফজলু, সজল (১৭) পিতা মমিনসহ ২০-২৫ জন হামলায় অংশ নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী আবু হেনা মোস্তফা কামাল ফরিদপুর থানায় অভিযোগ করেন যে, মাছুয়াঘাটা গ্রামের মৃত ইউনুস মোল্লার ছেলে গোলাম মোস্তফা (৫৫), মেহেদী হাসান তপন (৪৯), মেহেদী হাসান কালু (৪২) তার ক্রয়কৃত সম্পত্তির ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোরপূর্বক পাকা ঘর নির্মাণ করছিল। তিনি বাধা দিলে হামলাকারীরা তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এসে নির্মাণ কাজ বন্ধ করলেও পরবর্তীতে পুনরায় কাজ শুরু করে প্রতিপক্ষ, এরপরই উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
এই সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন গাজ্জাল মুন্সীসহ অন্তত ২০ জন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন
মৃত নাছির মোল্লার ছেলে সওকত মোল্লা (আশঙ্কাজনক), সাবেক সেনা সদস্য ও ভুক্তভোগী আবু হেনা মোস্তফা কামাল, রবি প্রামানিক, হালিম মুন্সী, রুহুল আমিন বুলু, রমজান, রাঙ্গা প্রাং, রেজাউল প্রাং, গিয়াস, সাগর মন্ডলসহ আরও অনেকে।
ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাজ্জাল মুন্সীকে নেওয়া হলে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হামলার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে মকলেস বাহিনীর নেতৃত্বাধীন চক্র ঈদগাহ মাঠকে কেন্দ্র করে মিথ্যা তথ্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারের চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে ফরিদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ঘটনার পর পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।এ বিষয়ে মামলা হয়েছে গতকাল দুইটি, দুই মামলায় দুইজন গ্রেফতার আছে। একজন কুদরত-এ-খোদা অন্যজন মিলন ওরফে ধলা।

