ছোট বেলার খেলার সাথী, স্কুল বন্ধু, প্লাটিনাম ‘৯০ ব্যাচ মুসা আর কারো কাছে রক্ত চাইবে না।বন্ধু মুসার স্ত্রী ভাবি ও বলবে না ভাই মুসার শরীর টা আবারো খারাপ হয়েছে পিজি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এক ব্যাগ রক্ত ম্যানেজ করে দিয়েন।বন্ধু হায়াত কিংবা মিলিও আর বলবে না মুসা কি ফোন দিয়ে ছিলো।প্রথম প্রথম আমরা সবাই চেষ্টা করি এক সময় থেমে যায়। ঠিক এমনি করে প্রিয় মুসা চীর দিনের জন্য থেমে গেলো।গতকাল ঢাকায় তার প্রথম জানাজা শেষে লাশ বরিশাল বাকেরগঞ্জ নিয়ে যাওয়া হলো সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।
মুসা ঢাকায় ভালো ব্যাবসা করতো।তার ছেলে লেখাপড়ার পাশাপাশি বটবৃক্ষ হয়ে বাবার পাশে দাঁড়িয়েছে।মুসার স্ত্রী আমার খুব কাছের ছোট ভাই ফরহাদ এর বড় বোন। খবর টা গতকালই জানতে পারলাম বন্ধু মুসার মৃত্যুর পর। স্নেহের ছোট ভাই ফরহাদ তার ফেইসবুকে লিখেছে বড় বোনের স্বামী আর নেই।
আমার জীবনে মুসার খুব প্রভাব রয়েছে। আমার আপন বড় ভাই এস এম মুছা। সেও চলে গেছেন না ফেরার দেশে।
ভাই মুছা,বন্ধু মুসা এখন আর কেউ নেই। বন্ধু মুসার সাথে আমার সম্পর্কটা একটু গভীর ছিলো। কারন আমরা আদর্শগত ভাবে এক ছিলাম।আমি দীর্ঘ ১৫ বছর বরিশাল ছিলাম।ছোট বেলায় দুজনই খুলনা খালিশপুর ছিলাম এবং একই স্কুলের ছাত্র ছিলাম।তারপরও ঢাকাতে প্রায় কাছাকাছি ছিলাম।দেখা কম হলেও প্রায়ই ফোনে কথা হতো।বলতো দোস্ত যমুনায় আসলে আমার অফিসে এসে চা খেয়ে যাবি।মাঝেমধ্যে স্কুলের মিলনমেলায় দেখা হতো তখন বলতো তুই তো আসলি না।
বন্ধু মুসার মৃত্যুর খবর হায়াত মাহমুদ গ্রুপে ও আমাকে ম্যাসেজ করে দিয়েছে। হয়তো আমারও মৃত্যুর খবর এমন করে কেউ কারো ম্যাসেজে দেবে ব্যাস্ত জীবনে সেই খবর হারিয়ে যাবে।বন্ধু মুসার জন্য আমরা কেউ কিছু করতে পারনি।মুসার স্ত্রী ও সন্তান যুদ্ধটা একাই করেছে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করেছে। তারপর সময়ের কাছে তারা হয়তো পরাজিত হয়েছে তবে শান্তনা একটাই লড়াই টা শেষ পর্যন্ত ছিলো। শেষের দিকে বন্ধু মুসা যখন বেশ অসুস্থ হয়ে পড়লো এক ব্যাগ রক্তের জন্য আমাকে ম্যাসেজে নক করেছিলো।সে সময় নিজের জন্য এতোটা ব্যাস্ত ছিলাম এক ব্যাগ রক্ত যোগাড় করে দিতে পারিনি।এই না পাড়ার কষ্ট অনেক দিন বয়ে বেড়াতে হবে।আসলে আমরা এমনই।
তবে মুসার মৃত্যুর পর দেখলাম ৯০’র বিভিন্ন গ্রুপে তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে।তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।তবে এখন মনে হচ্ছে আজকের মতো শোক প্রকাশ না করে সবাই মিলে রক্ত যোগাড় করে দিতে পারলে আজকে হৃদয়ে গভীরে যন্ত্রণা পেতাম না।সবাইকে চলে যেতে হবে। খুব ছোট বেলায় বাবাকে হারিয়েছি,২ বছর প্রায় হতে চললো মাকে হারালাম,কিছুদিন পর বড় ভাই কে হারালাম।জীবন থেকে একে একে সব প্রিয় মানুষ গুলো বিদায় নিচ্ছি আর আমার জীবন ও ওদের কাছে আসার জন্য অপেক্ষা করছে।
বন্ধু মুসা তোমার জন্য অনেক দোয়া রইলো।
আল্লাহ তোমাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের উচ্চ মাকামে স্থান দান করুক।