মেহেরপুরের গাংনীতে বিষধর সাপের কামড়ে শামীম হোসেন (১৫) নামের এক কিশোরের মৃ’ত্যু হয়েছে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃ’ত্যু হয়।
নিহত শামীম হোসেন উপজেলার তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের মাঠপাড়া করমদি গ্রামের মিজানুর রহমান হারানের ছেলে। এর আগে গতকাল রাত আনুমানিক দুইটা বা আড়াইটার দিকে তার নিজ কক্ষ থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় সাপে কামড় দেয়।
স্থানীয়রা জানান, রাতে নিজ কক্ষে শামীম হোসেন ঘুমিয়ে ছিল। ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে সাপে কামড় দেয়। পরে বাড়ির লোকজন জানতে পেরে কয়েকজন কবিরাজের কাছে নিয়ে যায়। পরে তার অবস্থা খারাপ হলে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। সেখানে কিছুক্ষণ থাকার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃ’ত্যু হয়।
রোহান আহমেদ বলেন, সকালে আমি খেলার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। এ সময় দেখি একজনকে সাপে কেটেছে। আমি দ্রুত সেখান থেকে লোকজন সাথে নিয়ে তাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।হাসপাতালে নিতে আমাদের অনেক দেরি হয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা সবুজ আহমেদ বলেন, সাপের কামড়ালে মানুষ কেন যে ওঝাঁ বা কবিরের কাছে নিয়ে যায় তা বুঝি না। সাপের অ্যান্টিভেনম পাওয়া যায় হাসপাতালে। যদি দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায় রোগী অনেকটাই সুস্থ হয়ে যায়।আমাদের পাড়াতে আজ একজন মারা গেছে সাপের কামড়ে। হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেক দেরি করে ফেলেছিল। দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হলে রোগী অনেকটাই সুস্থ হয় ল।
আকাশ আহমেদ নামের একজন বলেন, আমাদের বাড়ির কাছে শামীম হোসেন নামের একজন সাপের কামড়ে মারা গেছে।রাতে ঘুমানো অবস্থা তাকে সাপে কামড় দেয়। পরে আমরা সকালে ঘর খুঁড়ে সাপ পেয়েছি।দেখে মনে হচ্ছে সাপটা অত্যন্ত বিষধর। আমরা সঙ্গে সঙ্গে সাপটা মেরে ফেলি।
নিহত শামীম হোসেনের বাবা মিজানুর রহমান হারান বলেন, যখন জানতে পারি আমার ছেলেকে সাপে কেটেছে তখনই আমরা কয়েক জায়গায় নিয়ে যাই।অবস্থা খুবই খারাপ হতে থাকে।পরে খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে, বুক বন্ধ হয়ে যায়। তখন কয়েকজনকে নিয়ে আজ বুধবার সকালে গাংনী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কিছুক্ষণ থাকার পর আমার ছেলে মারা যায়।বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ যে কত বেদনার তা কাউকে বলে বোঝানো সম্ভব না।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আব্দুল্লাহ আল আজিজ বলেন, সাপে কাটা রোগীটিকে আমাদের কাছে সকাল সাড়ে সাতটার সময় আনা হয়। তাকে আমাদের কাছে শেষ মুহূর্তে আনা হয়েছিল। তার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। আমরা তাকে অ্যান্টিভেনম দিয়েছিলাম। এক ঘন্টা পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আমরা জানতে পারি সাপে কামড় দেয়ার পর তাকে ওঝাঁ বা কবিরাজের কাছে নিয়ে যায়। আসলে মানুষের উচিত যখন কাউকে সাপে কাটবে তখন অতি দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসা। তাছাড়া আমাদের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনম রয়েছে।

