বাগেরহাটের মোংলায় সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করে সাংবাদিক মাসুদ রানার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে একাধিক ভুয়া (ফেক) আইডি ও পেজের মাধ্যমে অসত্য ও অপপ্রচার ছাড়ানো হচ্ছে। এ ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে মোংলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা সাংবাদিক মাসুদ রানা (রেজা মাসুদ)।
তিনি জানান, সম্প্রতি তার বাচ্চার সাথে শুয়ে থাকার একটি ছবি তার ফেসবুক থেকে ডাউনলোন করে এবং তা এডিট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করছে একটি মাদকচক্র সিন্ডিকেট।
সাংবাদিক মাসুদ রানা ছাড়াও সম্মানিত ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, চাকরিজীবী এবং ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে ওই চক্রটি। এতে করে এলাকায় সামাজিক অস্থিরতা ও বিভ্রান্তি বাড়ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন নামের কয়েকটি ফেসবুক আইডি ও পেজ ব্যবহার করে নিয়মিতভাবে রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যাক্তির বিরদ্ধে মিথ্যা তথ্য এবং চরিত্র হননের মত বিষয় প্রচার করা হচ্ছে। এসব পোস্টে বিভ্রান্ত হচ্ছে এবং এতে ব্যক্তিগত, পারিবারিক সম্মান ক্ষুন্ন হওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিবেশও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
সাংবাদিক মাসুদ রানা (রেজা মাসুদ) ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ভোরের পাতা, স্বদেশ প্রতিদিন ও যশোর থেকে প্রকাশিক দৈনিক যশোর এর মোংলা উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন।
মাদক নিয়ে তার ধারাবাহিকভাবে সংবাদ প্রকাশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন নামিয় ফেইসবুকের ফেইক আইডি থেকে সাংবাদিক মাসুদ রানার ছবি ব্যবহার করে মানসম্মান হানিকর বিভিন্ন পোস্ট করে অসত্য ও অপপ্রচার চালাচ্ছে। এই সব আইডির বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা ও মানহানিকর তথ্য পোস্ট করার মাধ্যমে হেয় প্রতিপন্ন করার অভিযোগ করেছেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, আমার নাম ও ছবি ব্যবহার করে খোলা একাধিক ফেসবুক আইডি ও ব্লু টিকসহ ফেইক পেজে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে একাধিক লেখালেখি করা হয়েছে। যা সম্প্রতি আমার দৃষ্টিগোচর হয়। এটা সম্পুর্ন উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে। এটা সম্পুর্ন পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। সাংবাদিকতার দায়িত্ববোধ থেকে তথ্য-চিত্র সংগ্রহ করে মাদকের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করেছি। অথচ অসাধু ব্যবসায়ী চক্র তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড আড়াল করার জন্য আমার নামে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন পোস্ট ছড়িয়ে মব ভায়োলেন্স সৃষ্টির মাধ্যমে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করার চেষ্টা করছে। এটি সাংবাদিকতা ও মুক্ত গণমাধ্যমের ওপর নগ্ন আঘাত। এ ঘটনায় তিনি ইতোমধ্যে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এর আগেও তিনি একই অভিযোগে সাধারণ ডায়রি করেন। প্রয়োজনে আদালতের মাধ্যমে বিটিসিএল ও সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহযোগিতা নিয়ে মিথ্যাচারকারীদের আইনের আওতায় আনবেন।
স্থানীয় নেতারা ঘটনাটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে দেখছেন। তাদের দাবি এই অপপ্রচারের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের দুর্নীতি ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরির চেষ্টা চলছে। বিষয়টিকে শুধুমাত্র বিরক্তির নয়, বরং সমাজের জন্য এক ভয়াবহ ফাঁদ হিসেবে মনে করছেন। এ ঘটনায় সাংবাদিক মহলসহ সর্বস্তরের মানুষ তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন।
প্রবীণ সাংবাদিক নূর আলম বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। তার মতে একটি সংঘবদ্ধ চক্র পরিকল্পিতভাবে ভুয়া আইডি ব্যবহার করে সম্মানিত সাংবাদিক ও নাগরিকদের টার্গেট করছে। যা একজন জাতীয় দৈনিকের দায়িত্বশীল সাংবাদিকের জন্য শুধু অপমানজনকই নয়, বরং গণতন্ত্র, মুক্ত গণমাধ্যম ও জনস্বার্থের জন্য ভয়ংকর হুমকি।
সাংবাদিক মহলসহ সাধারণ মানুষ মনে করছেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের অপরাধ ঢাকতে গিয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে মূলত পুরো গণমাধ্যমকেই ভয় দেখানোর অপচেষ্টা করছে। এটি শুধু একজন সাংবাদিকের মানহানিই নয়, বরং জনস্বার্থ, গণতন্ত্র ও মুক্ত সাংবাদিকতার প্রতি নগ্ন চ্যালেঞ্জ। তারা বলেন, সাংবাদিক যদি জনগণের স্বাস্থ্য ও জীবনের জন্য ভয়ংকর এমন একটি সত্য তুলে ধরতে গিয়ে এভাবে মানহানির শিকার হন, তবে সাধারণ মানুষ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কিভাবে সাহসী ভূমিকা রাখবে?
সচেতন মহল বলেন, এই ধরণের নিন্দনীয় কর্মকাণ্ড দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া থামানো যাবে না। তারা দাবি জানান, অবিলম্বে মিথ্যাচারকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হোক। অসাধু ব্যবসায়ী চক্রের এই ধরণের অপচেষ্টা শুধু সাংবাদিক নয়, পুরো সমাজকেই আতঙ্কিত করে।
স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিকরা মনে করছেন এই ধরণের অপপ্রচার দ্রুত বন্ধ না করা গেলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তারা প্রশাসনের প্রতি কঠোর নজরদারি এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে এসব ফেক আইডির ব্যবহারকারীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন।
মোংলা থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মানিক চন্দ্র গাইন বলেন, সাংবাদিক মাসুদ রানা (রেজা মাসুদ)'র ছবি ব্যাবহার করে তার বিরুদ্ধে ফেসবুকে অসত্য ও অপপ্রচার মুলক পোস্ট করা হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে। এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন তিনি। বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।