শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় শিশু চুরির মামলায় গ্রেফতার শাহজাদীকে হাসপাতাল থেকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
গত রবিবার দুপুরে তাঁকে খুলনার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তোলা হয়।
তবে তাঁর পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না এবং কেউ জামিন আবেদনও করেননি। এ কারণে শুনানি না করেই আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মায়ের সঙ্গে থাকার সুযোগ না থাকায় ১১ দিন বয়সী কন্যাশিশুকেও শাহজাদীর সঙ্গে খুলনা জেলা কারাগারে নেওয়া হয়। আদালতে এ দৃশ্য দেখে উপস্থিত অনেককেই আবেগাপ্লুত হতে দেখা যায়।
বাগেরহাটের রামপালের সিরাজুল ইসলাম ও ফকিরহাটের মেয়ে শাহজাদীর সংসারে চার কন্যাশিশু রয়েছে। সম্প্রতি তিনি পঞ্চমবারের মতো অন্তঃসত্ত্বা হন।
ছেলে সন্তান হওয়ার জন্য স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির চাপ এবং কন্যা হলে বিবাহ বিচ্ছেদের হুমকির মুখে পড়েন তিনি। গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে সিজারিয়ানের মাধ্যমে তিনি আরও একটি কন্যাশিশুর জন্ম দেন।
এ খবর শোনার পরপরই স্বামী সিরাজুল হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান এবং পরবর্তী সময়ে আর যোগাযোগ করেননি।
মানসিক চাপ সামলাতে না পেরে শাহজাদী ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে একই হাসপাতালে জন্ম নেওয়া আরেক নারীর নবজাতক পুত্রসন্তান চুরি করেন। সিসি ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষণ ও পুলিশের দ্রুত তৎপরতায় ওই দিন সন্ধ্যায় নবজাতককে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় শাহজাদী ও তাঁর মা নার্গিস বেগমকে আসামি করে মানবপাচার আইনে মামলা করেন শিশুটির বাবা মির্জা সুমন। পরে নার্গিস বেগমকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ছাড়পত্রের দিনও নবজাতকের বাবা বা মামা হাসপাতালে আসেননি। শাহজাদীর দূরসম্পর্কের এক ভাই বিল পরিশোধ করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার এসআই শাহীন কবির বলেন, আসামি সুস্থ হওয়ায় আইন অনুযায়ী তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
আদালতে দায়িত্বপ্রাপ্ত জিআরও এসআই বোধন চন্দ্র বিশ্বাস জানান, শাহজাদীর পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নবজাতকের বিষয়টি আদালতে আলাদাভাবে কেউ উত্থাপন না করায় প্রচলিত নিয়ম অনুসারেই শিশুকে মায়ের সঙ্গেই রাখা হয়েছে।