নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে উধাও হওয়া ৬টন মালামাল পরিবহনযোগ্য একটি ট্রাকের(ঢাকা মেট্রো- ট-১৫-৭৫০২)বডি কেটে বিক্রি করার সময় ট্রাক ড্রাইভারসহ ২জনকে আটক করেছে পার্বতীপুর মডেল থানা পুলিশ।খন্ডিত ট্রাক ও কাটা অংশ সমুহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন,রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৩৩ নং ওয়ার্ডের মাহিগঞ্জ মহল্লার আমিরুল ইসলামের পুত্র ট্রাক ডাইভার সোহাগ(৩৩),ও পার্বতীপুর নুর নগর মহল্লার আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে ফেরদৌস(৩২)।
গত ২৫ জুলাই(শুক্রবার)রাত ৮টায় পার্বতীপুরের জ্ঞানাঙ্কুর হাই স্কুল মোড়ের ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডে এ ঘটনাটি ঘটে।
ট্রাক মালিক মাসুম রানা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়,ড্রাইভার সোহাগ গত ২৩ জুলাই ট্রাকটি নিয়ে উধাও হয়।তার কোন খোঁজ খবর না পেয়ে মাসুম রানা সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় সাধারন ডায়েরী করেন।সেখানকার থানা পুলিশ ড্রাইভারের মোবাইল নম্বর ট্রাকিং করে পার্বতীপুর মডেল থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশের অভিযানিক টিম শহরের নতুন বাজার এলাকা থেকে ড্রাইভার সোহাগকে আটক করে ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডে নিয়ে আসে।ওই সময় ফেরদৌসের নেতৃত্বে ট্রাকটির পেছনের বডি’র লোহার অংশসমুহ কেটে নিয়ে জনৈক ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী মাসুদ পারভেজের গোডাউন ঘরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।কিছু অংশ ওই গোডাউন ঘরে রাখাও হয়।পুলিশ চোরাই মালামালসহ ফেরদৌসকে আটক করতে সক্ষম হলেও অন্যান্য অপরাধী ও ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী মাসুদ পারভেজ সটকে পড়ায় তাদেরকে আটক করতে পারেনি।
পুলিশের উদ্ধারকারী টিম এস,আই দুলাল হোসেন ও ট্রাক মালিক মাসুম রানা জানান,আটককৃত ট্রাক ড্রাইভার ও ফেরদৌস তাদের কাছে স্বীকার করেছে,পুরো ট্রাকটি মোটা টাকার চুক্তিতে ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী মাসুদ পারভেজের নিকট বিক্রি করা হয়।ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী ট্রাকটি কেটে ট্রাকের কাটা অংশ তার গোডাউন ঘরে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলে ফেরদৌস ও তার সঙ্গীরা ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রাশ দিয়ে ট্রাকটি কাটার কাজে অংশ নেয়।এদিকে স্থানীয় বিএনপি'র কয়েকজন নেতৃবৃন্দ ভাংরি ব্যবসায়ী মাসুদকে মামলায় না জড়ানোর জন্য জোর তদবির অব্যাহত রাখে।
অন্যদিকে ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডের ফাঁকা জায়গায় শুক্রবার দুপুর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রকাশ্যে ট্রাকটি’র বডি কাটার কাজ অব্যাহত থাকলেও বিষয়টি স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা'র কারও নজরে না পড়ায় সচেতন মহল বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
মডেল থানা পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ,ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী মাসুদ পারভেজ রেলওয়ে ষ্টেশনের উত্তর পাশে একটি বড় জলাশয় অবৈধভাবে ভরাট করে সেখানে নির্মান করেছে বিশাল গোডাউন।
সম্প্রতি পার্বতীপুর শহরের বাফা'র গোডাউনের সংযোগ রেল লাইনের লোহার পাত কাটার সময় তারই গোডাউনের কয়েকজন কর্মচারী ধরা পড়ে রেলওয়ে পুলিশের হাতে।ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা হলে তারা মাসুদ পারভেজের নির্দেশে এসব চুরির কাজ করে থাকেন বলে স্বীকারোক্তি দেয়।
এ ব্যাপারে পার্বতীপুর মডেল থানায় মামলা করা হয়।মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন,এই ঘটনায় মামলা হয়েছে।আটক দুইজনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।বাদি এজাহারে ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী মাসুদ পারভেজ কে অভিযুক্ত না করায় তিনি আসামী নন।এই মামলায় অজ্ঞাতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
ঢাকা মোড়ের এক ব্যবসায়ী (৪৫)বলেন,বিতর্কিত ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী মাসুদ পারভেজ দীঘদিন ধরে চোরাই মালামাল ক্রয় করে আসছে।
আটকৃত আসামিদের স্বীকারোক্তি,সার্বিক ব্যাখ্যা এবং বাদীর জবান বন্দী সব মিলিয়ে এই ঘটনার এক নাম্বার আসামি হবার কথা ছিল ভাংরি ব্যবসায়ী মাসুদ পারভেজ।অথচ পুলিশ রহস্যজনক কারণে এজাহার থেকে মাসুদ পারভেজের নাম বাদ দিয়েছে।
বিষয়টি সাংবাদিক মহল ও পার্বতীপুরের সর্বস্তরের সুধী মহলের মাঝে ব্যাপক বিতর্কের ঝড় উঠেছে।