জেলা শহরের নিকটবর্তী ভেমরুল্লাহ গ্রামের প্রতারক সাইফুলের বিরুদ্ধে তার সৎ মা রত্না(৪৯)কে মিথ্য মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে।বিষয়টির নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে।
প্রাপ্ত তথ্যে ও সরেজমিনে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়,চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শঙ্করচন্দ্র
গ্রামের মাঝের পাড়ার কিতাব আলীর মন্ডলের মেয়ে, দু পুত্র সন্তানের জননী রত্না খাতুন(৪৯)এর সাথে সম্মন্ধনের মাধ্যমে ভেমরুল্লাহ গ্রামের পুকুর পাড়ার দু সন্তানের জনক আঃ সাত্তার মহুরার সাথে ২৪.০২.২০২৪ ইং তারিখে নিকাহ রেজিঃ হয়। নিকাহ র এক পর্যায়ে সংসার ভালই চলছিলো দাম্পত্ম জীবণে।রত্নাকে তার স্বামী আঃ সাত্তার মহুরা বসত ভিটার সাড়ে ৩ শতক জমি লিখে দেবার দু মাসের মাথায় আঃ সাত্তার স্ট্রোক করে ইন্তেকাল করেন।
এরপর শুরু হয় মৃত আঃ সাত্তার মহুরার মেয়ে ডালিয়া ও ছেলে সাইফুল ইসলামের ষড়যন্ত্র।রত্নার স্বামী আঃ সাত্তার মহুরা মৃত্যুর কালে চুয়াডাঙ্গার অগ্রণী ব্যাংকের কেদারগঞ্জ শাখায় একাউন্টে ২ লাখ ৩৯ হাজার টাকা রেখে যান।ওই একাউন্টের নোমিনি ছিলেন রত্না খাতুন।ওই টাকার জন্য প্রথম পর্যায়ে সাইফুল,তার বোন ডালিয়া গং প্রায়ই গালাগালি,মানুষিক নির্যাতনের পর শারিরিক নির্যাতন করে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
এক পর্যায়ে সাইফুল ও ডালিয়া গংদের চাপে পড়ে অগ্রণী ব্যাংকের কেদারগঞ্জ শাখার একাউন্ট থেকে ২ লাখ ৩৯ হাজার টাকা তুলে এনে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ওয়ারিশদের মাঝে ভাগ করে দেন।এ টাকা ভাগের বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেছেন প্রতারক সাইফুল।
এরপর, ধান্দাবাজ,প্রতারক সাইফুল ও তার বোন ডালিয়া দ্বিতীয় ধাপে আরেক নাটকের অবতারণা ঘটায়।আঃ সাত্তার মৃত্যুর আগে স্ত্রী রত্না খাতুন(৪৯)এর নামে বসতঃ ভিটার সাড়ে ৩ শতকসহ মোট ৫ শতক জমি রেজিঃ করে দিয়ে যায়।যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬৫ লাখ টাকার বেশি।এই টাকা ও ভিটা মাটির বিষয়টি ধান্দাবাজ,প্রতারক সাইফুল,তার বোন ডালিয়া গং রা সহ্য করতে না পেরে রত্নার ছেলের চাকুরির জন্য ৬ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে বলে মিথ্যা অভিযোগ এনে জাল চাতুরি করে নিজেরা ৬ লাখ টাকার অঙ্ক বসিয়ে চেকে চুয়াডাঙ্গা সদর প্রথম শ্রেনীর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে একটি মিথ্যা ও হয়রানী মূলক মামলা করেছে প্রতারক সাইফুল। যার নং সিআর ৮১৬/২০২৫।তাং ২৫.০৬.২০২৫ ইং।এ মামলা হাজিরার তাং ২৭.০৭.২০২৫ ইং।
এরইমধ্যে,গত ২০.০৭.২০২৫ ইং তারিখে প্রতারক, ধান্দাবাজ সাইফুল ও তার বোন ডালিয়া সৎ মা রত্নাকে (৪৯) হুমকি ধামকি ও দায়ের কৃত মামলায় জেলের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক সাড়ে ৩ কাঠা জমি রেজিঃ করানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে।রত্নার অভিযোগ মোতাবেক ওই জমি সাইফুলের ভাইরার নামে রেজিঃ করানোর চেষ্টা করে।তা জানাজানি হয়ে গেলে রত্না তাতে রাজি হয়নি।
প্রতারক সাইফুল তার সৎ মা রত্নাকে জানিয়েছে,রত্নার নামীয় জমি তার নামে লিখে দিলে চেক ফেরত দিবে এবং মামলা তুলে নিবে।
অসহায় রত্না (৪৯) আরো অভিযোগ করে জানিয়েছেন,তার সৎ মেয়ে ডালিয়ার ৫০ হাজার টাকার ঋন পাইয়ে দিতে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর বাসষ্টান্ড সংলগ্ন TMSS নামক একটি এনজিও থেকে তার নামের দুটি চেকের পাতা জামানত স্বরুপ দিয়ে সহযোগিতা করেন।কিন্তু, ঋন পরিশোধের পর ওই চেকের পাতা স্বজ্ঞানে জামিনদার হিসেবে আমার কাছে হস্তান্তর করেনি।এরপর আমি জানতে পেরে সৎ মেয়ে ডালিয়ার কাছে ব্লাক চেক দুটি ফেরত চাইলে সে শুধু সময় ক্ষেপন করতে থাকে।আজ অবধি চেকের পাতা দুটি আমাকে ফেরত দেয়নি।এরই মাঝে হিংসা ও ষড়যন্ত্র করে ডালিয়া তার ভাই সাইফুলের মাধ্যমে আমার অজান্তে ৬ লাখ টাকা পাওনার নাটক সাজিয়ে চেক জালিয়াতির মিথ্যা অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করে।
বিষয়টি নিয়ে TMSS এর মাঠকর্মী মাহফুজ্জামানের কাছে চেক ফেরতের দাবী করলে সে বলে আমাদের কিছু ভুল হয়ে গেছে।চেক দুটি আপনার কাছে ফেরত দেয়া উচিত ছিলো।বিষয়টি মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা পর্যন্ত গড়াবে তা ভাবিনি।চেকের কোনাই দুটি দাগ কিংবা সিল কোনটাই মারা হয়নি।এটা আমাদের ভূল ছিলো।সমস্যা নেই বলে একটি "প্রত্যায়ন" দিয়ে বলে বেশ কিছুদিন ধরে শুধু ঘুরাতেই আছে।আজ পর্যন্ত সে প্রত্যায়ন দেয়
নি।
রত্না খাতুন (৪৯)দাবি করেন-"তার নিজের নাম স্বাক্ষর করা চেকের বাম কোনে দুটি দাগ না দেয়া কিংবা এনজিও সিল না দেয়া আবার ওই অবস্হাই তার হাতে চেক হস্তান্তর না করার পিছনে আগে থেকেই যোগসাজোস ছিলো বলে মনে হচ্ছে।আর এখন সেটা পরিষ্কার বুঝতে পারছি।
বিষয়টি নিয়ে রত্নার মামা ওয়ায়েস কুরুনী জানান,ওই এনজিও র মাঠকর্মী ও ম্যানেজার আমাদের কাছে সরাসরি স্বীকার করেছিলেন।চেক বিষয়ে কিছু ভুল ছিলো বলে সেটাও জানিয়েছিলেন।কিন্তু পরবর্তীতে একটি প্রত্যায়ন দিবে বলে আর দিচ্ছে না। জাকারিয়া নামক এক ব্যক্তি জানান,মাঠকর্মী মাহফুজ প্রত্যায়ন দিবে বলে আমার কাছে কথা দিয়েছিলেন।কিন্তু,পরবর্তীতে তা দিচ্ছে না।এতেই সমস্যা তৈরি হয়েছে।এখন নাকি তারা পুরোটাই অস্বীকার করে চলেছেন।
TMSS এনজিও মাঠকর্মী মাহফুজ্জামানের সাথে অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে,তিনি বলেন,তারা ডালিয়াকে লোন দিয়েছিলেন ৫০ হাজার টাকা।জামিনদার হিসেবে রত্নার জাতীয় পরিচয় পত্র ও ছবি নিয়েছিলাম।তার নামের কোন চেক নেয়নি।প্রথমে বললেন, ডালিয়ার ভাই সাইফুলের নামের ব্লাঙ্ক চেক নিয়েছিলাম এবং ঋন পরিশোধের পর তা ফেরত দিয়ে দিয়েছি।তিনি আরো বলেন,৫০ হাজার টাকার জন্য এনজিও তে জামানত স্বরুপ কোন ব্লাঙ্ক চেক লাগে না।
অভিযোগের বিষয়ে প্রতারক সাইফুল জানান,তার নামে জমি লিখে দিলে সব ঝামেলা শেষ করে দিবেন।সাইফুলের বোন ডালিয়া জানান, তিনি খুব অসুস্হ।তিনি কিছু জানেন না।তিনি কিছু বলতে পারবেন না।
এদিকে, একই রকম মিথ্যা ও হয়রানী মামলা করে সাইফুল তার মেজো সৎ মা আয়েশাকে নাজেহাল করেছেন বলে মামলার নথি থেকে জানা যায়।ভেমরুল্লাহ গ্রামের কয়েকজন জানান, মৃত. আঃ সাত্তার মহুরার ছেলে ও মেয়ে তাদের সৎ মায়ের সাথে ভালো ব্যবহার করেনি।স্বৈরাচারের অনুগত সাইফুল মিথ্যা ও হয়রানী করার জন্য আদালতে মিথ্যা মামলা করেছে।আমরা সাইফুলের কৃত্তিকলাপের শাস্তি চায়।
বিষয়টি, যথাযথ বিবেচনা করে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি আওতায় আনতে এবং অসহায় রত্না কে আইনগত সহযোগিতা করে ন্যায় বিচার পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন।#