পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর পৈকখালী গ্রামে মালয়েশিয়া প্রবাসী কাওসার আকনের ছেলে মো. সোহেল আকনকে গ্রেফতার করেছে ভাণ্ডারিয়া থানা পুলিশ। গত ১৪ মে তার মায়ের রহস্যজনক মৃত্যুর আগে তিনি তার মায়ের দায়ের করা নির্যাতন মামলার প্রধান আসামি ছিলেন।
পুলিশ জানায়, ওই দিন দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে মোসা. দুলিয়া বেগম (৫৩) নামের এক নারীর ঝুলন্ত মরদেহ তার নিজ বাড়িতে উদ্ধার করা হয়। তিনি কাওসার আকনের স্ত্রী এবং স্থানীয় রুবেল ও সোহেল আকনের মা। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা হিসেবে ধারণা করা হলেও, পারিবারিক কলহের প্রেক্ষাপটে হত্যার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্ত কর্মকর্তারা।
জানা যায়, মৃত্যুর কিছুদিন আগে দুলিয়া বেগম তার ছেলে সোহেল আকন ও পুত্রবধূ মোসা. লিজা আক্তারের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করেন। পিরোজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করা সিআর মামলা (নং-১৮৩/২০২৫) বর্তমানে বিচারাধীন। মামলায় দণ্ডবিধির ৩২৩, ৩৭৯, ৩৮০ ও ৫০৬(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন দুলিয়া বেগম। চিকিৎসার খরচ মেটাতে তিনি এক লাখ সত্তর হাজার টাকায় একটি মিশুক গাড়ি কেনেন। কিন্তু তার ছেলে সোহেল আকন, যিনি মাদকাসক্ত ও উশৃঙ্খল জীবনযাপন করতেন, প্রায়ই মাকে গালিগালাজ ও মারধর করতেন। এক পর্যায়ে তিনি মায়ের কাছ থেকে জোরপূর্বক ৫০ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন এবং মিশুক গাড়িটি ছিনিয়ে নেন। পুত্রবধূ লিজা আক্তারও দুলিয়া বেগমের গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল খুলে নেন বলে অভিযোগে বলা হয়। পরে, ছেলে ও পুত্রবধূর নির্যাতনে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে দুলিয়া বেগম আদালতের শরণাপন্ন হন।
এদিকে, শনিবার (৫ জুলাই) ভাণ্ডারিয়া থানা পুলিশ তার মায়ের দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে মো. সোহেল আকনকে গ্রেফতার করে।