মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার হামিদপুর গ্রামে ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসা এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্রী ও তার বাবার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়। মেয়েকে সাঁতার শেখাতে গিয়ে পুকুরে ডুবে প্রাণ হারিয়েছেন বাবা ও মেয়ে দুজনেই। সোমবার (৯ জুন) বিকেল ৪টার দিকে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন হামিদপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ইটভাটা ব্যবসায়ী বাবুল আহমদ (৬০) এবং তাঁর মেয়ে হালিমা মোহাম্মদ (১৭)। হালিমা ঢাকার খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী ছিলেন এবং আগামী ২৬ জুন শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে হালিমা মা ও ভাইবোনদের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসে। বিকেলে বাবার সঙ্গে বাড়ির পুকুরে সাঁতার শেখার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্লাস্টিকের টিউব ব্যবহার করে মেয়েকে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন বাবুল আহমদ। হঠাৎ হালিমার হাত টিউব থেকে ফসকে গেলে সে ডুবে যেতে থাকে। মেয়েকে রক্ষা করতে গিয়ে বাবুলও পানির গভীর অংশে গিয়ে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে প্রায় আধা ঘণ্টার চেষ্টায় দুজনকে উদ্ধার করেন। তবে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে তাঁদের মৃত্যু হয়।
দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। বাবুল আহমদ ও তাঁর মেয়ের মরদেহ বাড়ির আলাদা কক্ষে রাখা হয়। স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। প্রতিবেশীরা সান্ত্বনার চেষ্টা করলেও সেই শোক উপশম হয়নি।
রাত ১০টায় বাড়ির সামনে তাঁদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বলে জানান পরিবারের সদস্য এবং জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আজাদ মিয়া। পরে তাঁদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, বাবুল আহমদ ছিলেন একজন সজ্জন, পরিশ্রমী ও সদালাপী মানুষ। তাঁর অকাল মৃত্যুতে এলাকাবাসী গভীরভাবে শোকাহত। হালিমাও পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী ও বিনয়ী ছিল, যা তাকে পরিবার ও প্রতিবেশীদের প্রিয় করে তুলেছিল।