সাত বছরেও শেষ হয়নি চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের ভবন নির্মাণ কাজ। ২০১৮ সালের মার্চে শুরু হওয়া এই প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থ শেষ হলেও নির্মাণ কাজ থেমে আছে বহুদিন ধরে। ভবনের একাংশে ইটের খোয়া ব্যবহার করে ঢালাই করার অভিযোগ ওঠায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। মাঝে কিছুদিন কাজ শুরু হলেও পুনরায় বন্ধ হয়ে যায় বরাদ্দ ফুরিয়ে যাওয়ায়।
ফলে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ভবনে কাজ চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরের জরাজীর্ণ কালেক্টর ভবনের দুটি ছোট কক্ষে গাদাগাদি করে চলছে অফিসের কাজ। ছাদের পলেস্তার খসে পড়া এবং বৃষ্টির পানিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নষ্ট হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের কার্যক্রম চলছে একটি ভাড়া বাসায়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলীর গাফিলতির কারণেই ভবন নির্মাণে এ অবস্থা হয়েছে। তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থলে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। অসম্পূর্ণ ভবনটি এখন বখাটে ও মাদকসেবীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। এতে স্থানীয়রা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পিয়াস কনস্ট্রাকশন ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই চারতলা ভবন নির্মাণের দায়িত্ব নেয়। কাজের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হলেও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বরাদ্দের সব বিল উত্তোলন করলেও নির্মাণ কাজ অসমাপ্ত রেখেই চলে গেছে।
পরিবার পরিকল্পনা অফিসের উপ-পরিচালক দীপক কুমার সাহা বলেন, ‘প্রকল্পের বরাদ্দ শেষ হয়ে যাওয়ায় ঠিকাদার কাজ শেষ না করেই চলে গেছে। জরাজীর্ণ ভবনে অফিস চালাতে গিয়ে ঝুঁকিতে রয়েছি। বৃষ্টি হলে কাগজপত্র ভিজে যায়। দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে। নতুন ভবনে কার্যক্রম চালানো গেলে সাধারণ মানুষকে সেবা দেয়া সহজ হতো।’
স্থানীয়রা অনিয়মের তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। দীর্ঘ সময় ধরে নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় ভবনের অবকাঠামো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যা সরকারি অর্থ ও জনসেবার অপচয় বলে মনে করছেন তারা।