সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার রূপবাটি ইউনিয়নের কলিয়ার চর গ্রামে।
মঙ্গলবার সকালে মাইক দিয়ে ডেকে ৪টি গ্রামের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর এমনই এক ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে
জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল দশটার দিকে উপজেলার রূপবাটি ইউনিয়নের কলিয়ার চর, বাগধুনাইল, করশালিকা এবং রূপবাটি গ্রামের মসজিদের মাইক থেকে হঠাৎ গ্রামবাসীকে লাঠিসোঁটা, ফালা, হাঁসুয়া নিয়ে বের হতে আহ্বান করা হয়। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ৪ গ্রামের শত শত মানুষ বের হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘন্টাব্যাপী এ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে বাগধুনাইল গ্রামের সিরাজ প্রামানিকের ছেলে নজরুল প্রামাণিক (৫০) নিহত হয়েছে। এছাড়া উভয় পক্ষের আরও ১০ জন আহত হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়- বাগধুনাইল গ্রামের একটি খেলার মাঠ নিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ৬ মাস আগে দুই গ্রামের মধ্যে মারামারি হলেও স্থানীয় ভাবে মিমাংসা হয়। এরপর গত সোমবার বাগধুনাইল গ্রামের নিজুবর নামের একজন কৃষক নিজের জমির ধান কাটতে গেলে কলিয়ার চর গ্রামের লোকজন মারধর করে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই সোমবার (১৯ মে) বিকেলে রূপবাটি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সরোয়ারকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠে কলিয়ার চর গ্রামের মানুষের বিরুদ্ধে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাগধুনাইল, করশালিকা এবং রূপবাটি গ্রাম ঐক্যবদ্ধ হয়ে কলিয়ার চর গ্রামের সাথে মঙ্গলবার সকালে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সংঘর্ষ চলাকালেই নজরুল প্রামাণিক নামের একজন কৃষক নিহত হন। এতে আরও ১০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। পরে শাহজাদপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও নজরুল প্রামাণিকের নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ায় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ধাওয়া দিলে কলিয়ার চর গ্রামের মানুষ পালিয়ে যায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দলে দলে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে কলিয়ার চর গ্রামের নারী-পুরুষ।
এ যেন কোন যুদ্ধের ময়দান। হঠাৎ যুদ্ধবিরতির সংবাদে কাঁথা-বালিশ, ঘটিবাটি গুটিয়ে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে দলে দলে পালিয়ে যাচ্ছে মানুষ। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে থাকা শাহজাদপুর থানার ওসি মো. আছলাম আলী জানান- দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এই বিরোধের সূত্র ধরেই কয়েকটি গ্রামের মানুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই সংঘর্ষে নজরুল প্রামাণিক নামে একজন নিহত হয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এম. রওশন আলম
বিশেষ প্রতিনিধি
তারিখ : ২০-০৫-২৫