Crime News tv 24
ঢাকাবুধবার , ১৪ মে ২০২৫
  1. অন্যন্য
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলা
  5. জাতীয়
  6. দেশজুড়ে
  7. ধর্ম
  8. ফিচার
  9. বাংলাদেশ
  10. বিনোদন
  11. মতামত
  12. রাজনীতি
  13. রান্না
  14. রাশিফল
  15. লাইফস্টাইল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

অসাম্প্রদায়িক ও যুক্তিবাদী কথাশিল্পী শওকত ওসমানের প্রয়াণ দিবস আজ।

Link Copied!

আজ ১৪ মে অসাম্প্রদায়িক ও যুক্তিবাদী কথাশিল্পী শওকত ওসমান এঁর প্রয়াণ দিবস। বাংলা সাহিত্যে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম আলোচিত কথাসাহিত্যিক ছিলেন শওকত ওসমান। তিনি বাংলাদেশের কথাসাহিত্যে অন্যতম প্রধান প্রাণপুরুষ। তিনি ছিলেন আধুনিকতা, অসাম্প্রদায়িক ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী একজন লেখক। আজ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী। এই বরেণ্য কথাশিল্পী ১৯৯৮ সালের ১৪ মে ৮১ বছর বয়সে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি, সমস্যা, বৈষম্য ও নিপীড়িত মানুষের কথা লিখে গেছেন; অসাম্প্রদায়িক ও প্রতিবাদী কথাশিল্পী শওকত ওসমান। তিনি সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। তবে তার লেখার মাধ্যমে তিনি সাধারণ মানুষের মধ্যে সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ চেতনা জাগ্রত করার চেষ্টা করেছেন।

বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিকাশ ঘটে। তখন তাদের মধ্যে মুক্তবুদ্ধি, উদার নৈতিক চিন্তা ও পাশ্চাত্য মানবতাবাদী জীবন দৃষ্টির আলোকে সাহিত্যচর্চার একটা স্ফুরণ লক্ষ্য করা যায়। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে কাজী নজরুল ইসলাম অসাম্প্রদায়িক কবি ও লেখক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠেন। বাঙালি মুসলিম লেখকদের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সাহিত্যচর্চার প্রেরণা ছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। আর শওকত ওসমান ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আধুনিক বাংলা কথাসাহিত্য রচনার অন্যতম দিকপাল।

প্রয়াত কবি ও কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদ শওকত ওসমানকে বলতেন ‘অগ্রবর্তী আধুনিক মানুষ’। শওকত ওসমান শুধু একজন কথাসাহিত্যিক ছিলেন না। তিনি ছিলেন একাধারে একজন কবি, নাট্যকার, রম্য লেখক, প্রাবন্ধিক, অনুবাদক, গ্রন্থ সম্পাদক প্রভৃতি। উপন্যাস ও গল্প রচনার পাশাপাশি তিনি কবিতা, প্রবন্ধ, নাটক, রম্যরচনা, স্মৃতিকথাসহ বেশকিছু শিশুতোষ গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন দিকে বিচরণ করে শওকত ওসমানের অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। তবে তিনি বাংলা সাহিত্যে একজন কথাশিল্পী হিসেবেই সুপরিচিত।

১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সাবলসিংহপুর নামক গ্রামে একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শওকত ওসমান। তার পিতার নাম শেখ মোহাম্মদ এহিয়া ও মাতার নাম গুলজান বেগম। পারিবারিকভাবে দেয়া তার প্রকৃত নাম হচ্ছে শেখ আজিজুর রহমান। তিনি প্রথম দিকে এই নামেই লেখালেখি শুরু করেছিলেন। ‘সওগাত’ ‘আজাদ’ ও ‘বুলবুল’ প্রভৃতি পত্রিকায় শেখ আজিজুর রহমান নামে বেশকিছু কবিতা প্রকাশের তথ্য পাওয়া যায়। তৎকালীন সময়ে আজিজুর রহমান নামে আর একজন কবি থাকায় তিনি নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। তখন থেকেই তিনি শওকত ওসমান নামে লেখালেখি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে এই নামেই তিনি বাংলা সাহিত্য অঙ্গনে সুপ্রতিষ্ঠিত হন।

তার শৈশব-কৈশোর, শিক্ষাজীবন, কর্মজীবনের শুরু কলকাতায় হলেও উত্তরকালে তিনি পরিবারসহ বাংলাদেশেই আমৃত্যু বসবাস করেছেন। শওকত ওসমান কলকাতার আলিয়া মাদ্রাসা থেকে প্রবেশিকা (১৯৩৩), সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে আইএ (১৯৩৬) ও বিএ (১৯৩৯) এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ (১৯৪১) পাস করেন।

আইএ পাস করার পর তিনি কিছুদিন কলকাতা করপোরেশন এবং বাংলা সরকারের তথ্য বিভাগে চাকরি করেন। এমএ পাস করার পর তিনি গভর্নমেন্ট কমার্শিয়াল কলেজে (১৯৪১) লেকচারার পদে নিযুক্ত হন। ১৯৪৭ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ অব কমার্সে যোগ দেন এবং ১৯৫৯ সাল থেকে ঢাকা কলেজে অধ্যাপনা করে ১৯৭২ সালে স্বেচ্ছায় অবসরে যান। চাকরিজীবনের প্রথমদিকে স্বল্পসময় তিনি কৃষক পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন।

সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদবিরোধী শওকত ওসমান আজন্মকাল শোষক শ্রেণির বিরুদ্ধে কলম ধরে ছিলেন। বাংলাদেশের বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, আইয়ুব খানের সামরিক শাসন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন প্রভৃতি সামাজিক রাজনৈতিক সংগ্রামে, সংকটে সমকালীন বাংলাদেশের কথাসাহিত্যে শওকত ওসমান হয়ে ওঠেন অনিবার্য, অবিস্মরণীয়, অনন্য এক কথাশিল্পী।

তার প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি রচনা হলো, উপন্যাস জননী, ক্রীতদাশের হাসি, রাজা উপাখ্যান, জাহান্নাম হইতে বিদায় (১৯৭১), নেকড়ে অরণ্য , আর্তনাদ (১৯৮৫), রাজপুরুষ, ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী, সংস্কৃতির চড়াই-উতরাই (১৯৮৫), মুসলিম মানসের রূপান্তর , নাটক আমলার মামলা, পূর্ণ স্বাধীনতা চূর্ণ স্বাধীনতা (১৯৯০)। এইসব রচনাবলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিল জননী ও ক্রীতদাসদের হাসি। জননীতে সামাজিক জীবন ও ক্রীতদাসের হাসিতে রাজনৈতিক জীবনের কিছু অন্ধকার দিক উন্মোচিত হয়েছে।

প্রাচীন কাহিনী, ঘটনা ও চরিত্রের রূপকে লেখক সমকালীন রাজনীতিতে স্বৈরাচারী চরিত্র ও নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরেছেন। জননীতে গ্রাম ও নগরজীবনের সংঘাতে একটি পরিবারের বিপর্যস্ত অবস্থার বিবরণ আছে। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত নেকড়ে অরণ্য গ্রন্থে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক বাংলার নরনারীর নির্যাতনের করুণ বিবরণ আছে।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি কলকাতায় ছিলেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে শব্দসৈনিকদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। তিনি নিয়মিত কবিতা ও কথিকা পাঠ করতেন। এগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের যেমন যুদ্ধক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে, তেমনি তাদের মনোবল করেছে নিবিষ্ট। তিনি তার উপন্যাসগুলোতে মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যা, নির্যাতন, নিপীড়ন স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, যা আমাদের স্থবির করে দেয়। বিশেষ করে তার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ কালরাত্রি খন্ডচিত্র ও মুজিবনগর উল্লেখযোগ্য।

তিনি ১৯৭৫ সালে ভারতে গমন করেন এবং সেখানে টানা পাঁচ বছর অবস্থান করেছিলেন। দেশের বিশিষ্টজনদের অনুরোধে ১৯৮১ সালে ১৭ এপ্রিল তিনি আবার ঢাকায় ফিরে আসেন। তবে পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান কালে তিনি নিরলসভাবে সাহিত্য রচনায় মনোনিবেশ করে ছিলেন।

দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সাধারণ মানুষকে জাগিয়ে তুলতে তিনি বেশ কয়েকটি প্রবন্ধ ও গ্রন্থ রচনা করেন। এ ছাড়াও তিনি সামাজিক কুসংস্কার, ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে অনেক প্রবন্ধ ও গল্প রচনা করেছেন। তিনি শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশে বেশ কিছু শিশুতোষ গ্রন্থ রচনা ক