খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়িতে বেসরকারি মুঠোফোন নেটওয়ার্ক অপারেটর কোম্পানি রবি’র দুই টেকনিশিয়াকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায় উগ্রপন্থী সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ। রবিবার (২০ এপ্রিল) সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছেন সংগঠনটির সমন্বয়ক প্রভাষক মো.শাহজাহান শাজু।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শনিবার দুপুর সোয়া একটার দিকে মানিকছড়ি উপজেলার খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সড়ক সংলগ্ন ধর্মঘরস্থ ময়ুরখীল বিলে থাকা রবি টাওয়ার মেরামত করতে যায় টেকনিশিয়ান মো. ইসমাইল হোসেন ও আব্রে মারমা। সেখানে হাজির হয় কয়েকজন সশস্ত্র উগ্রপন্থী পাহাড়ি সন্ত্রাসী। অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি দেখিয়ে টেকনিশিয়ানদের টাওয়ার থেকে নামিয়ে জোরপূর্বক মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে।
প্রসঙ্গত গত ২২ জানুয়ারি ভোররাতে, খাগড়াড়ির দীঘিনালা, মানিকছড়ি ও মাটিরাঙ্গায় ১১টি মোবাইল টাওয়ারের পাশাপাশি রাঙামাটির নানিয়ারচরসহ বিভিন্ন এলাকায় ১০টি টাওয়ারে সমন্বিত হামলা চালায় ইউপিডিএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। তারা সার্ভার রুম ভাঙচুরসহ টাওয়ারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এর পাশাপাশি বেশকিছু যন্ত্রপাতিও লুট করে নিয়ে যায় বলে রবি'র পক্ষ থেকে অভিযোগ শুনা যায়। পরবর্তীতে গত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) থেকে মোবাইল টাওয়ার সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হলেও ২/৩ দিনের ব্যবধানে সমস্ত টাওয়ারে আবারও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, মিটার ভাঙচুর ও লুটপাট করে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীরা।যা গত ২৭ তারিখ মুঠোফোন নেটওয়ার্ক অপারেটর রবি কতৃক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতর মাধ্যমে জানানো হয়। এতে জানাযায়, ওইসব এলাকার নেটওয়ার্ক যোগাযোগ ব্যবস্থা একদম ভেঙ্গে পড়েছে। নিরাপত্তা সংকটে পড়েছে স্থানীয় জনগণ। খাগড়াছড়ির ও রাঙামাটির প্রায় ৫০ টি অধিক মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ার বিচ্ছিন্ন করে দেয় উগ্রপন্থী সন্ত্রাসীরা। এতে কয়েক লাখ গ্রাহক চরম বিপাকে পড়েছেন। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং প্রশাসনিক কাজকর্মে ব্যাপক বিঘ্নিত ঘটছে।
এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করছেন সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ। অনতিবিলম্বে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করে ভুক্তভোগীদের মুক্তি ও ন্যায় বিচারক প্রদান এবং পুনরায় মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবা নিশ্চিত করার দাবি জানান। একইসাথে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জোর অনুরোধ জানান সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ।
উল্লেখ্য গত চার দিন পূর্বে (১৬ এপ্রিল) সকালে খাগড়াছড়ি কুকিছড়া থেকে টমটম গাড়ি যোগে খাগড়াছড়ি সদরে আসার পথে গিরিফুল এলাকা থেকে একদল অস্ত্রধারী উগ্রপন্থী পাহাড়ি সন্ত্রাসী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ (পাঁচ) জন শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
অপহরণের চার দিন অতিবাহিত হলেও এখনো খোঁজ মেলেনি খাগড়াছড়িতে অপহৃত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীদের। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ভোর থেকে শিক্ষার্থীদের উদ্ধারের জন্য যৌথবাহিনী অভিযান চালাচ্ছেন বলে জানতে পারি। আমরা সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ এর পক্ষ থেকে যৌথ অভিযান পরিচালনায় প্রশাসনের এই উদ্যোগে স্বাগত জানাচ্ছি সেই সাথে অপহৃত ছাত্র/ছাত্রীদের ও বেসরকারি মুঠোফোন নেটওয়ার্ক অপারেটর রবি'র টেকনিশিয়ানদের উদ্ধার করে পরিবারের নিকট দ্রুত সময়ের মধ্যে হস্তান্তর করার জোর দাবি জানাচ্ছি।