Crime News tv 24
ঢাকারবিবার , ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  1. অন্যন্য
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. খেলা
  5. জাতীয়
  6. দেশজুড়ে
  7. ধর্ম
  8. ফিচার
  9. বাংলাদেশ
  10. বিনোদন
  11. মতামত
  12. রাজনীতি
  13. রান্না
  14. রাশিফল
  15. লাইফস্টাইল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নওগাঁর মন্দা ললিতপুর গ্রামে এক সনাতন ধর্মাবলম্বী সুশীলের পরিবারকে ২ বছর ধরে সমাজে একঘরে কেন?

উজ্জ্বল কুমার জেলা প্রতিনিধি নওগাঁঃ-
সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৫ ১২:১৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

নওগাঁর মান্দা উপজেলার ললিতপুর গ্রামে সুশীল চন্দ্র মণ্ডলের পরিবারকে সমাজচ্যুত করার ঘটনা আমাদের সাম্প্রতিক সময়ের এক নির্মম বাস্তবতার দৃষ্টান্ত। যেখানে ধর্মীয় উৎসব মিলনের, আনন্দের এবং একতার প্রতীক হওয়ার কথা, সেখানে এক পরিবারকে দুই বছর ধরে পূজামণ্ডপে যেতে বারণ করা, সমাজ থেকে একঘরে করে রাখা – এটি শুধুই অমানবিক নয়, বরং অসাংবিধানিক ও অসামাজিক।

এই সমাজচ্যুতি শুরু হয়েছে একটি পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ব্যক্তিগত বিরোধ কীভাবে একটি ধর্মীয় অধিকার খর্ব করতে পারে? একটি পরিবারকে পূজার আচার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়া মানে শুধু তাদের বিশ্বাসে আঘাত হানা নয়, বরং এটি একধরনের সামাজিক নিপীড়নও।

সুশীল চন্দ্র মণ্ডলের বক্তব্য অনুযায়ী, তার পরিবারকে গত বছর পূজায় চাঁদা দেওয়া বা মণ্ডপে যেতেও নিষেধ করা হয়েছিল। এ বছরও একই অবস্থা। শুধু তাই নয়, গ্রামে সমাজ এখন দুই ভাগে বিভক্ত – একটি নতুন সমাজ গড়ে উঠেছে, সেখানেও এই পরিবারকে গ্রহণ করা হয়নি। প্রশাসন এবং পূজা উদযাপন ফ্রন্ট বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করছে বলে জানালেও বাস্তবে ভুক্তভোগীর পূজায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে কি না, সেটিই আসল প্রশ্ন।

আমরা ভুলে যাচ্ছি, ধর্মীয় উৎসব ব্যক্তিগত না, এটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির প্রতীক। সেখানে ব্যক্তিগত শত্রুতা, দলাদলি বা সমাজপতিদের সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই কাউকে বাদ দেওয়ার বৈধতা দেয় না। সংবিধান অনুযায়ী, প্রত্যেক নাগরিকের নিজ ধর্ম পালন করার অধিকার আছে – তা ব্যক্তি হোক, পরিবার হোক, সংখ্যালঘু হোক বা সংখ্যাগরিষ্ঠ।

এই প্রেক্ষাপটে, প্রশাসনের শুধু “বলে দেওয়া” নয়, বরং সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন যে, ভুক্তভোগী পরিবারটি নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজায় অংশ নিতে পারছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই ঘটনাটি নজরদারির আওতায় এনে এর স্থায়ী সমাধান করতে হবে।

এটি শুধু ললিতপুর গ্রামের সমস্যা নয়, এটি আমাদের সমাজের গভীর অসহিষ্ণুতা, গ্রুপবাজি ও সামাজিক বিভাজনের প্রতিচ্ছবি। আমরা যদি এখনই এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান না নিই, তবে আগামী দিনে আরও অনেক পরিবার সমাজচ্যুতির শিকার হবে – শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, জীবনের সবক্ষেত্রে।

আমাদের এখনই প্রশ্ন তুলতে হবে – ধর্মীয় উৎসবে বিভাজনের রাজনীতি কাদের স্বার্থে? আর একঘরে করে দেওয়ার অধিকারই বা কারা দেয়?
নওগাঁ #